শহিদুল ইসলাম রেদুয়ান : শান্তিগঞ্জ উপজেলার পূর্ব পাগলা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মৃত্যুঞ্জয় সরকারের বিরুদ্ধে টাকা আত্মসাৎ ও শিক্ষার্থীদের উপর নির্যাতন সহ নানা অনিয়ম দূর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ বিষয়ে গত ১৬ই সেপ্টেম্বর প্রধান শিক্ষকের অপসারণ চেয়ে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এবং শান্তিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর এমন লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন অত্র বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি মো: মছদ্দর আলী।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, প্রধান শিক্ষক মৃত্যুঞ্জয় সরকার বিদ্যালয়ে যোগদানের পর থেকে নানা দূর্নীতি ও অনিয়ম করে আসছেন। কমিটির কয়েকজন সদস্য প্রধান শিক্ষকের অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলেও তার কোন প্রতিকার পাওয়া যায়নি। স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি মছদ্দর আলী নির্বাচিত হওয়ার পর প্রধান শিক্ষক কে বিদ্যালয়ের আয়-ব্যায়, স্কুলের আবাসপত্র ইত্যাদি বিবরণী কমিটি বরাবর প্রকাশ করার অনুরোধ করলে প্রধান শিক্ষক দাম্ভিক করে বলেন স্কুলের আয়-ব্যয় কিংবা বিদ্যালয়ের তথ্যাদি তিনি কমিটি বরাবরে প্রকাশ করতে বাধ্য নন।
পরবর্তীতে লিখিতভাবে তথ্যাদি চেয়েও কোন সদোত্তর পাওয়া যায়নি। গোপনে তিনি পূর্বের কমিটির দ্বারা একই তারিখে ৭ বছরের হিসাব নিরীক্ষা করিয়ে নেন। কমিটির সদস্যগণ ও এলাকাবাসী প্রধান শিক্ষকের এরূপ কাজের প্রতিকার চেয়ে উর্ধতন কর্তৃকপক্ষ বরাবরে বিভিন্ন সময়ে অভিযোগ দায়ের সহ সংবাদ সম্মেলন করে প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষন করেন। তবে ৩০ হাজার টাকা, ছাত্র-ছাত্রীদের আনিকট থেকে প্রতিবছর বিভিন্ন ফি বাবদ ৬ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা, পুকুরে মাছ চাষের জন্য নিলাম বাবদ প্রতিবছর ৫ হাজার টাকা, পুরাতন বই, খাতা ইত্যাদি বিক্রি বাবদ প্রতিবছর প্রায় ৫ হাজার টাকা অভিযোগের তদন্ত হলেও প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি।
বিদ্যালয়ের তহবিল আত্মসাতের বিষয়ে অভিযোগে উল্লেখ করা হয় সহকারী প্রধান শিক্ষক, গ্রন্থাগারিক, অফিস সহায়ক, দপ্তরি, নৈশপ্রহরী, আয়া নিয়োগের নামে প্রধান শিক্ষক প্রায় ২৫ লক্ষ টাকা
ঘোষ গ্রহণ করেন। বিদ্যালয়ের ১০০ ফুট লম্বা পুরাতন টিনসেড ঘরের টিন, কাঠ ও অন্যান্য আসবাবপত্র বিক্রি বাবদ ২ লক্ষ টাকা, ৬টি রেইনট্রি গাছ বিক্রি বাবদ ৩০হাজার টাকা, ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে গাইড বই সিলেকশন করে কোন কোন প্রকাশনার প্রতিনিধির নিকট থেকে প্রতি বছর ৫০ হাজার টাকা, সরকারী প্রণোদনা বাবদ ৫ লক্ষ টাকা, রাসেল ল্যাব বাবদ সরকারী অনুদান ৬৫ হাজার টাকা সহ প্রায় ৪০ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করেছেন।
এছাড়াও ঐতিহ্যবাহী বিদ্যালয়টি ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌছে গেছে বিধায় প্রধান শিক্ষক মৃত্যুঞ্জয় সরকারকে অবিলম্বে চাকরী থেকে বরখাস্থ সহ তাহার সহযোগীদেরকে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের অভিযোগ করেছেন অত্র এলাকার সুশীল সমাজ।
অভিযোগের ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক মৃত্যুঞ্জয় সরকার বলেন, আমার বিরুদ্ধে উল্লিখিত অভিযোগ মিথ্যা বানোয়াট। এসব বিষয়ে আমি জড়িত নই।
এ ব্যাপারে শান্তিগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সুকান্ত সাহা বলেন, অভিযোগ আলোকে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।