শুক্রবার, ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ১২:৪৬ পূর্বাহ্ন

কুষ্টিয়ায় বৈষম্য বিরোধী কোঠা আন্দোলনের মৃত্যুর সারিতে যোগ হলো মাহিমের নাম।

মোঃ জুয়েল মাহমুদ উজ্জল, পরিচালক (উত্তরবাংলা) সংবাদ।
  • আপডেটের সময় : বুধবার, ২১ আগস্ট, ২০২৪
  • ৩১ Time View

কুষ্টিয়া অফিস।

বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে মৃত্যুর মিছিলে যোগ হলো কুষ্টিয়ার আরো এক শিক্ষার্থী। মা-ফুপুর অনুমতিতেই সঙ্গীদের ডাকে সাড়া দিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মিছিলে গিয়েছিল দশম শ্রেণির ছাত্র মাহিম হোসেন। তবে পুলিশের ছোড়া টিয়ারশেলের গ্যাসে মারাত্মকভাবে আহত হয় সে। হাসপাতালে চলছিল চিকিৎস, তবে সুস্থ করা সম্ভব হয়নি মাহিমকে।

মঙ্গলবার (২০ আগস্ট) সকাল ৭টার দিকে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে রক্তবমি আর শ্বাসকষ্টে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। পরে গ্রামের বাড়িতেই তার দাফন সম্পূর্ণ হয়।

কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার বেতবাড়িয়া ইউনিয়নের বামন পাড়া গ্রামের ইব্রাহিম হোসেনের বড় ছেলে মাহিম হোসেন (১৭)। পড়তো চাঁদ গ্রামের ইয়াকুব আহমদ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণিতে।

পরিবারিক সূত্রে জানা গেছে, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শুরু থেকে গ্রামের ছেলেদের সঙ্গে আন্দোলনের মাঠে নামে মাহিম। আন্দোলনের চূড়ান্ত পর্যায়ে এসে ছোট ফুপু রহিমার উৎসাহে ৪ আগস্ট মিছিলে যোগ দিতে উপজেলা সদরে যায়। কিন্তু সেখানে পুলিশের বাধার মুখে সঙ্গীদের ছেড়ে কুষ্টিয়ার উদ্দেশ্যে বাসে ওঠে। পাশের উপজেলা কুমারখালীতে গিয়ে বাস থেকে নেমে আবার আন্দোলনকারীদের সঙ্গে যোগ দেয় সে।

এসময় পুলিশের ছোড়া মুহুর্মুহু কাঁদানি গ্যাসের মধ্যে পড়ে মাহিম। স্থানীয় কয়েকজন নারী তাকে উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে নিরাপদে বাড়ি ফিরতে সহায়তা করেন। তবে বাড়ি ফিরে আর স্বাভাবিক হতে পারেনি মাহিম। তার মুখে ও শরীরে জ্বালা-যন্ত্রণা বাড়তে থাকে। একপর্যায়ে শনিবার (১৭ আগস্ট) সকাল থেকে প্রচণ্ড জ্বর ও শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হয় সে।

সোমবার রাতে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে কুষ্টিয়া সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মঙ্গলবার সকাল ৭টার দিকে সে মারা যায়।
বিকেলে গ্রামের বাড়ি পৌঁছায় মাহিমের মরদেহ। পরে ইয়াকুব আহমদ মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে জানাজা শেষে চাঁদট কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।

নিহত মাহিমের গ্রামের সহযোদ্ধা জুয়েল ও রফিক জানান, আন্দোলনের শুরু থেকে মাহিম তাদের গ্রুপে ছিল। অন্য ছেলেদের মতো সেও বাড়িতে না জানিয়ে জেলা ও থানা সদরের কর্মসূচিতে অংশ নিতো। সহকর্মীর মৃত্যুতে তারা চরম ব্যথিত।

নিহত মাহিমের ফুুপু রহিমা বিলাপ করতে করতে বলছিলেন, ‘দেশ স্বাধীন করতে শহীদ ভাইদের ডাকে আমার সোনা মিছিলে গিয়েছিল। সেখান থেকে ফিরে আমাকে সব ঘটনা জানিয়েছিল। কিন্তু এতটা অসুস্থ তা বুঝতে দেয়নি।’

মা রেহানা পুত্রশোকে শোকে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন। তাকে সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষা যেন কেউ খুঁজে পাচ্ছিলেন না।

নিহতের বাবা ইব্রাহিম হোসেন জানান, গ্রামের ছেলেদের সঙ্গে তার ছেলে আন্দোলন করেছে। উপজেলা সমন্বয়করা তার সঙ্গে ছিল। তাদের সঙ্গে আলোচনা করে মামলা ও পরবর্তী করণীয় ঠিক করবেন।

শেয়ার

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও
© All rights reserved © 2022 Uttorbangla24 live
Design & Develop BY Coder Boss
themesba-lates1749691102