স্টাফ রিপোর্টার, দোয়ারা বাজার থেকে
দোয়ারাবাজারে হরুফ আলী (২৮) নামের এক বিয়ে পাগল একে-একে বিয়ে করেছেন ৩টি। প্রথম স্ত্রীর দুই ছেলে সন্তান রয়েছে।এরমধ্যে প্রেম করে আরেকজনকে নিয়ে পালিয়ে বিয়ে করেন। ওই স্ত্রী বর্তমানে ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। এরই মধ্যে শ্যালিকাকে নিয়ে পালিয়েছে হরুফ আলী।
সাত মাস আগে প্রেম করে দ্বিতীয় স্ত্রী হিসেবে সুজিনা বেগমকে ঘরে তুলেন হরুফ আলী । সুজিনার দাবি সে ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। ওই অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে ঘরে রেখে ঈদের মার্কেটের কথা বলে শ্যালিকা রোকেয়া বেগমকে নিয়ে নিয়ে সে আবারো উধাও হয়েছে। এনিয়ে এলাকা
জুড়ে চলছে আলোচনা সমালোচনার ঝড়।
দোয়ারাবাজারের আগুণ্ডেরা গাঁও গ্রামে বিয়ে করে বিয়ের সাত মাস যেতে না যেতেই গর্ভবতী স্ত্রীকে ফেলে শ্যালিকাকে নিয়ে পালিয়েছে হরুফ আলী। শ্যালিকা রোকেয়া বেগমের অন্তঃসত্ত্বা বোন সুজিনা বেগম চরম বিপাকে পড়েছে।
এ ঘটনায় রোকেয়া নিখোঁজ উল্লেখ করে দোয়ারাবাজার থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের অক্টোবর মাসে উপজেলার বাংলাবাজার ইউনিয়নের আগুন্ডের গাঁও গ্রামের ফয়জুল ইসলামের মেয়ে সুজিনা বেগমকে বিয়ে করেন একই ইউনিয়নের পূর্ব ঘিলাতলি গ্রামের রিয়ান উল্লাহ’র ছেলে হরুফ আলী (২৮)। এর সাত মাস পর ফয়জুল ইসলামের অপর মেয়ে রোকেয়াকে নিয়ে পালিয়ে যায় হরুফ আলী।
শ্যালিকা রোকেয়া বেগমেকে (১৮) প্রেমের ফাঁদে ফেলে দেয় হরুফ আলী। ১৭ এপ্রিল সন্ধ্যায় স্ত্রীকে তার নিজের বাড়িতে রেখে শ্বশুর বাড়িতে বেড়াতে যায় হরুফ আলী। শ্যালিকা রোকেয়াকে নিয়ে ঈদের মার্কেটে যাওয়ার কথা বলে শশুড় বাড়ি থেকে বের হয়ে সে শ্যালিকাকে নিয়ে পালিয়ে যায়।
এদিকে মেয়েকে না পেয়ে পিতা ফয়জুল ইসলাম দোয়ারাবাজার থানায় মেয়ে নিখোঁজ উল্লেখ করে
একটি সাধারণ ডায়েরি করেন।
সূত্র জানায়, গত বছর শ্বশুড় ফয়জুল ইসলামের স্ত্রীকে ধর্মের মা ডাকার মাধ্যমে তাদের বাড়িতে আসা যাওয়ার সুযোগ পায় হরুফ আলী। আসা যাওয়ার এক পর্যায়ে স্ত্রী সুজিনা সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে সে। পরে গত বছরের অক্টোবর মাসে সুজিনাকে নিয়ে পালিয়ে কোর্ট ম্যারেজ করে। সুজিনা বর্তমানে ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা।
এ বিয়ের ৭ মাস যেতে না যেতে শ্যালিকাকে রোকেয়াকে নিয়ে আবারও পালিয়ে যায় আজব ওই দুলাভাই হরুফ আলী। সে একে একে দুই বোনকে নিয়ে পালিয়েছে এমন ঘটনায় এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
ঘটনায় খবর পেয়ে হরুফ আলীর বাড়িতে সাংবাদিকরা গেলে তার ঘরে তালা ঝুলানো দেখতে পান। সাংবাদিকদের উপস্থিতি দেখে হরুফ আলীর বাড়িতে জড়ো হয় গ্রামের লোকজন।
এসময় গ্রামের লোকজন জানান, হরুফ আলী দুষ্টু প্রকৃতির লোক।সে এর আগে গ্রামে আরও একাধিক ঘটনার জন্ম দিয়েছে।এলাকার মেয়েরা তার ভয়ে একা বের হতে ভয় পায়।
স্থানীয়রা আরো জানান, স্ত্রী সুজিনাকে বিয়ে করার আগে হরুফ আলী পাশ্ববর্তী জাহাঙ্গীর গাঁও গ্রামের একটি মেয়েকে বিয়ে করেছিল। সেখানে তার দু’ছেলে সন্তান রয়েছে।প্রথম স্ত্রীর সাথে তার মামলা চলমান রয়েছে।
সুজিনা বেগম ও রোকেয়া বেগমের পিতা ফয়জুল ইসলাম জানান, তিনিএকজন গরিব ও অসহায় লোক এলাকাবাসীর সহযোগিতায় ৪ ছেলে ২ মেয়ে নিয়ে অতি কষ্টে দিনপাত করছেন। তার পরিবারের সাথে এমন আচরণে তার সর্বস্ব লুন্টন করা হয়েছে। ঘটনাকারির বিচার চান তিনি।
সুজিনা বেগম বলেন, ৫ মাসের অন্তঃসত্ত্বা শিশু সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে তিনি চিন্তিত। তিনি এর সুষ্টু বিচার দাবি করেন।
এ বিষয়ে দোয়ারাবাজার থানার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই মিজানুর রহমান বলেন, মেয়েটিকে উদ্ধারের জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।
দোয়ারাবাজার থানার অফিসার ইনচার্জ দেবদুলাল ধর ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, হরুফ আলীকে পুলিশ খুঁজছে তাকে আটক করে আইনী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।