বিশ্বনাথ প্রতিনিধি : জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের তনয়া বাংলার সফল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র পক্ষ থেকে ‘জায়গা ক্রয় করে, নতুন ঘর বানিয়ে দিয়ে’ সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার ৯টি গৃহহীন-ভ‚মিহীন প্রতিবন্ধি পরিবারকে দেওয়া হয়েছে উপহারের ঘর। প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া উপহারের ঘরে ‘আপন ঠিকানা’ পেয়েছে ওই ৯টি সর্বহারা পরিবার।
প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর পেয়েছেন উপজেলার পালেরচক গ্রামের সুরমিন বেগম, আমতৈল গ্রামের তানিম আহমদ, জিয়া উদ্দিন, হেলাল উদ্দিন, নেহারা বেগম, জমসেরপুর গ্রামের রুমানা বেগম, রামপাশা গ্রামের শিল্পী বেগম, কাঠলীপাড়া গ্রামের আমিরুন নেছা, গড়গাঁও গ্রামের আলমগীর মিয়া।
উপজেলার রামপাশা ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডে পাঠাকইন গ্রামে প্রায় ৩০ লাখ টাকায় ২০ শতক (মৌজা রামপাশা) জায়গা ক্রয় করে প্রায় ২৩ লাখ ৮৫ হাজার টাকা ব্যয়ে ৯টি পৃথক পাকাঘর নির্মাণ করে দিয়েছে স্থানীয় উপজেলা প্রশাসন। প্রতিটি ঘরে প্রায় ২ লাখ ৬৫ হাজার টাকা করে ব্যয় হয়েছে। এর সাথে প্রত্যেক ঘরে রয়েছে বিদ্যুৎ সংযোগের পৃথক পৃথক মিটার ও বিশুদ্ধ পানি পানের জন্য একটি গভীর নলকূপ।
প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘরে সোমবার (৬ মার্চ) থেকে বসবাস শুরু করেছেন ওই ৯টি গৃহহীন-ভূমিহীন প্রতিবন্ধি পরিবারের সদস্যরা। মঙ্গলবার (৭ মার্চ) বিকেলে প্রধানমন্ত্রী-জননেত্রী শেখ হাসিনা’র নির্দেশে গৃহহীন-ভূমিহীন প্রতিবন্ধি পরিবারের জন্য দেয়া উপহারের ঘরগুলো পরিদর্শন করেন বিভাগীয় কমিশনার ড. মোহাম্মদ মোশাররফ হোসেন ও সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমান।
পরিদর্শনকালে তারা ৯টি পরিবারের প্রত্যেকটি পরিবারের সদস্যদের সাথে কথা বলে তাদের বিস্তারিত খোঁজখবর নেন। পাশাপাশি প্রত্যেক পরিবারকে নগদ ২ হাজার টাকা, তিনটি করে ফলজ গাছের চারা (আম, লেবু ও মাল্টা), সবজির বীজ ও শীতের কম্বল বিতরণ করেন। এসময় খালি জায়গায় আম ও লেবুর চারা রোপন করেন বিভাগীয় কমিশনার ও জেলা প্রশাসক।
এসময় উপস্থিত ছিলেন বিশ্বনাথ উপজেলা নির্বাহী অফিসার নুসরাত জাহান, সহকারী কমিশনার (ভূমি) আসমা জাহান সরকার, সিলেট পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি-১’র বিশ্বনাথ জোনাল অফিসের ডিজিএম সাইফুল ইসলাম, উপজেলার রামপাশা ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আবুল কাশেম মেম্বার, স্থানীয় (৬নং) ওয়ার্ডের মেম্বার জামাল আহমদ।
পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিভাগীয় কমিশনার ড. মোহাম্মদ মোশাররফ হোসেন বলেন, মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা দিয়ে ছিলেন যে কেউ গৃহহীন-ভূমিহীন থাকবে না। এ লক্ষেই আমরা কাজ শুরু করি। সিলেট ডিভিশনের ৪১টি উপজেলায় প্রায় ২১ হাজার ভূমিহীন আমরা চিহ্নিত করেছি।
আর ইতিমধ্যে প্রায় ১৫ হাজার ৫ শতাধিক পরিবারকে আমরা ভূমিসহ ঘর হস্তান্তর করেছি। এই মাসের ২১ তারিখের মধ্যে আরও ৩ হাজার ঘর আমরা হস্তান্তর করবো। এই কার্যক্রমকে আমরা দুই ভাগে ভাগ করেছি। একটি হল যাদের জমিও নেই, ঘরও নেই।
তাদের জন্য খাস জমিতে ঘর তৈরি করে দেয়া হচ্ছে। আর বিশ্বনাথের আমতৈল গ্রামে আপনারা জানেন, প্রধানমন্ত্রীর নজরেও আছে এটি একটি প্রতিবন্ধি এলাকা। এখানে বেশির পরিবার প্রতিবন্ধি। তাই তাদের নিয়ে গবেষনা হচ্ছে। এছাড়া তাদের জীবন মান উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে আমরা কাজ করছি।
আমরা কিছু প্রতিবন্ধি পরিবার পেয়েছি যাদের ভূমিও নেই, ঘরও নেই। আমরা প্রধানমন্ত্রীকে সেটা জানিয়েছি। তিনি বলেছেন যে তাদের জন্য পাশাপাশি এলাকায় জমি কিনে ঘর তৈরি করে দাও। সেই নির্দেশ মোতাবেক আজ তাদের জমি কিনে একটি খোলামেলা জায়গায় ঘর তৈরি করে দেয়া হয়েছে।
এটি একটি অনন্য উপহার। আর যাদের জমি আছে তাদের ঘর ভাল নেই। আমতৈলে সেই সব প্রতিবন্ধি ৭১টি পরিবারকে ঘর তৈরি করে দেয়ার কাজ শুরু হয়েছে। তিনি বলেন, ঘর পাওয়া ৯টি পরিবারের সকল সদস্যদের সাথে আমরা কথা বললাম। তারা নিজের নামে জমিসহ ঘর পেয়ে অনেক খুশি। তারা সবাই প্রধানমন্ত্রীর জন্য দোয়া করছেন।
নিজেদের প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করতে গিয়ে উপহারের ঘরের সুবিধাভোগী আলমগীর মিয়া বলেন, আল্লাহ যেনো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’কে আরো নেক হায়াত দান করেন। আমিরুন নেছা বলেন, আমাদের মতো অভাগীদের যে প্রধানমন্ত্রী বসবাসের জন্য নিজস্ব একটি ঠিকানা দিয়েছেন, আল্লাহ নিশ্চয়ই তাঁর অনেক ভালো করবেন।
জিয়া উদ্দিন বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমরা চিরঋনী। আর উপহারের ঘরের বসবাস শুরুর পর থেকে সর্বদা মুখে হাসি বিরাজ করছে সুরমিন বেগমের।