কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধিঃ
পূর্ব শত্রুতার জেরে কুষ্টিয়া দৌলতপুর উপজেলায় আপন দুই ভাই মনিরুল (২৪) ও মাসুমকে (২০) অপহরণের পর গুলি করে হত্যার দায়ে যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত পলাতক আসামি সুমন আলীকে (৩৯) গ্রেফতার করেছে র্যাব-১২ কুষ্টিয়া ক্যাম্পের অভিযানিক দল।
শুক্রবার (১৬ ডিসেম্বর) রাত ১১টার দিকে ঢাকার আশুলিয়ার কুরগাঁও এলাকা থেকে সুমনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। শনিবার সকালে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন র্যাব-১২ কুষ্টিয়া ক্যাম্পের কোম্পানী কমান্ডার স্কোয়াড্রন লিডার মোহাম্মদ ইলিয়াস খান।
গ্রেফতার সুমন কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার খলিসাকুন্ডি ইউনিয়নের খলিসাকুন্ডি বাজারপাড়া এলাকার আনারুল ইসলাম পাইলটের ছেলে।
র্যাব সূত্রে জানা গেছে, কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার খলিসাকুন্ডি গ্রাম থেকে ২০১৭ সালের ৪ জানুয়ারি বিকাল ৫টার দিকে মনিরুল ও তার ছোট ভাই মাসুমকে পূর্ব শত্রুতার জেরে অপহরণ করেন আসামিরা। ওই দিন রাতে মাথায় গুলি করে মনিরুল ও মাসুমকে হত্যা করে আসামিরা। পরের দিন মেহেরপুর জেলার গাংনী উপজেলার কোদালকাটি এলাকার মাঠের একটি হলুদ ক্ষেত থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
এঘটনায় নিহতদের মা ও কুষ্টিয়া সদর উপজেলার জগতী এলাকার মৃত মনছুর আলীর স্ত্রী মরিয়ম বেগম আসামিদের নামে দৌলতপুর থানার হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলার তদন্ত শেষে তদন্তকারী কর্মকর্তা আসামিদের বিরুদ্ধে ২০০৭ সালের ১৪ মে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। এরপর আদালত এ মামলায় ১৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য প্রমাণ শেষে রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেন। ২০২২ সালের ১৯ অক্টোবর বিকালের দিকে কুষ্টিয়া অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. তাজুল ইসলাম আপন দুই ভাই মনিরুল (২৪) ও মাসুমকে (২০) অপহরণের পর গুলি করে হত্যার দায়ে ৫ জনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সেই সঙ্গে তাদেরকে ২০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করা হয়েছে।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার খলিসাকুন্ডি গ্রামের গাজীর পাড়া এলাকার মৃত লোকমান হোসেনের ছেলে আসাদুল, একই গ্রামের বাজার পাড়ার পাইলটের ছেলে সুমন, একই গ্রামের হাতির পাড়ার বাসিন্দা ছাবের ও দর্গা পাড়ার বাসিন্দা জামিল এবং মিরপুর উপজেলার সদরপুর ইউনিয়নের বড়বাড়িয়া গ্রামের হান্নান মন্ডলের ছেলে মিনাল।
রায় ঘোষণার সময় আসাদুল ও মিনাল আদালতে উপস্থিত ছিলেন। যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি জামিল, সুমন ও ছাবের পলাতক ছিলেন। পলাতক সুমনকে অভিযান চালিয়ে র্যাব গ্রেফতার করেছেন।
এ মামলার আসামি টোকন, জাহাঙ্গীর ও ইয়ারুল ক্রসফায়ারে নিহত হওয়ায় হত্যার দায় হতে অব্যাহতি প্রদান করা হয়েছে।