মিনহাজুল হক বাপ্পী লালমনিরহাট জেলা প্রতিনিধিঃ
এক প্লটে ২৫০ বিঘা জমিতে কৃষকের মুখে হাসি ফুটিয়েছেন উপজেলার কাকিনা ইউনিয়নের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মৃণাল কান্তি রায়।
লালমনিরহাট জেলার মধ্যবর্তী কালীগঞ্জ উপজেলা। কাকিনা ইউনিয়নে প্রায় ২৫০ বিঘা জমিতে এক প্লটে সরিষা চাষ হচ্ছে। জানা যায়, আগে দুই ফসলের বেশি চাষ হতো না তবে উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি অফিসার মৃণাল কান্তি রায়ের পরামর্শে সরকারের বিভিন্ন কৃষিবান্ধব পদক্ষেপের কারণে বর্তমানে কাকিনা ইউনিয়নের জমিতে তিন ফসলে চাষ হচ্ছে। তিনি বলেন, ফসল তোলার পর অবশিষ্ট জমিতে সরিষার বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে হাসি।ফুটিয়েছে।
সেখানে গিয়ে জানা যায়, কালীগঞ্জে কয়েক বছর আগেও জলাবদ্ধতাসহ নানা কারণে এ অঞ্চলের কিছু জমিতে বোরো ধান কাটার পরও দীর্ঘদিন পতিত ছিল। কিন্তু এখন অবশিষ্ট জমিতে চাষাবাদ হচ্ছে। দেশি-বিদেশি জাতের সরিষার মধ্যে বারি-১৪, বিনা-৯, বিনা-৪ চাষ করা হয়েছে। কৃষকরা উচ্চ ফলনশীল বারি-১৪ জাতের সরিষা বেশি আবাদ করেছেন। এ ছাড়া বারি-১৪, বারি-১৭ জাতের সরিষার ফলন বেশি এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বেশি, তাই সরিষার বাম্পার ফলন হওয়ায় ধানের গুদাম হিসেবে বিখ্যাত সব গ্রামেই সরিষা চাষিরা খুশি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয়ের তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে কালীগঞ্জ উপজেলায় ২ হাজার ৩শ’ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। যা গত বছরের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ। সরিষার বাম্পার ফলন ও বাজার দর সন্তোষজনক হওয়ায় একদিকে কৃষকরা আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছেন, অন্যদিকে ব্যবসায়ী, সরিষার তেল মিল মালিক, শ্রমিকরা সব আয়োজন করছেন।
ভোজ্যতেলের সরবরাহ ও আমদানি নির্ভরতা কমাতে এসব সরিষা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে জানিয়েছেন কৃষি কর্মকর্তারা।
উপজেলার মদাতি ইউনিয়নের নিপানিয়া দোলায় কৃষক মিজানুর রহমান ৬ দোন জমিতে সরিষা চাষ করেছেন। তিনি বলেন, ধান কাটার পর জমি ছেড়ে দিতাম। তবে এবার উপ-সহকারী কৃষি অফিসার সুরুজ্জামানের পরামর্শে সরকারি ভর্তুকিতে জমি না রেখেই প্রথমবারের মতো সরিষা চাষ করছি। প্রতি দোনে ফলনও বেড়েছে ৫-৬ মণ, এবারই প্রথম বাড়তি আয় হবে। সরিষা বিক্রির টাকা দিয়ে চলতি মৌসুমে ধান আবাদ করব। আগামীতে সব জমি চাষ করব।
আরেক কৃষক শ্রী যীশু কৃষ্ণ রায় জানান, সরিষা চাষে খরচ কম। ফলনও অন্যান্য ফসলের তুলনায় ভালো। সরিষা অল্প সময়ে ঘরে তোলা যায় তাই ঘরেই তুলেছি ও ভালো বাজারে বিক্রি করব। সরিষা চাষে অনেক লাভ হবে।
কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোছাঃ মাহমুদা খাতুন জানান, কৃষকের বাড়তি ফসল হিসেবে সরিষা চাষে উৎসাহিত করা হচ্ছে। এছাড়া বিনা মূল্যে দেশি-বিদেশি জাতের সরিষা ও সার বিতরণ করে কৃষকদের সব ধরনের পরামর্শ দিয়ে থাকি।