শহিদুল ইসলাম রেদুয়ান: শান্তিগঞ্জে সাক্ষ্য প্রদানকে কেন্দ্র করে ইউপি সদস্য’র ওপর মিথ্যা ও অপপ্রচারের অভিযোগ উঠেছে।
উপজেলার শিমুলবাঁক ইউনিয়ন পরিষদের ৭নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য রাসেল আহমেদের বিরুদ্ধে এসব অপপ্রচারে জনমনে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
জানা যায়, দুই বছর পূর্বে মুজিব বর্ষ উপলক্ষ্যে শিমুলবাঁক ইউনিয়নের চাঁনপুর গ্রামে ২৬টি, মুক্তাখাই গ্রামে ৩টি গৃহ নির্মাণ করে দেওয়া হয়। এরই প্রেক্ষিতে ইউপি সদস্য রাসেল আহমেদের উপর টাকা আত্মসাৎ এর অভিযোগ করেন মুক্তাখাই গ্রামের আশ্রায়ণ প্রকল্পের নির্মাণাধীন ৩টি পরিবার।
এসময় অভিযোগকারীরা বলেন, গত দুই বছর আগে ভূমিহীনদের ঘর নির্মাণের জন্য জামানতের কথা বলে ৭০ হাজার টাকা করে ৩টি হতদরিদ্র পরিবারের কাছ থেকে ২ লাখ ১০ হাজার টাকা এবং খরচ বাবদ আরও ৩ হাজার টাকা করে ৯ হাজার টাকা নেন ওই ইউপি সদস্য। ঘর হস্তান্তরের দুই বছর পর টাকা ফেরত দেওয়ার কথা ছিল। হতদরিদ্র ৩টি পরিবারের কাছে ঘর ও দলিল হস্তান্তরের দুই বছর পেরিয়ে গেলেও অভিযুক্তরা হতদদ্রি পরিবারের কাছ থেকে নেওয়া ২ লাখ ১০ হাজার টাকা এখন পর্যন্ত ফেরত দেননি। টাকা ফেরত চাইতে গেলে উল্টো গালাগাল করছেন ইউপি সদস্য রাসেল আহমদ।
এদিকে, সম্প্রতি কয়েক বছর পূর্বে মুক্তাখাই সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরী তোফায়েল আহমদকে গাছে বেঁধে বেদারক মারধর করা হয়েছিল। এই সময় ইউপি সদস্য ও প্যানেল চেয়ারম্যান রাসেল আহমদ আহত দপ্তরী’র চিকিৎসা সেবা প্রদান করেছিলেন। এবং উপরিক্ত মামলায় ইউপি সদস্য সাক্ষ্য প্রদান করায় ক্ষেপে উঠে বিবাদী ৩টি পরিবারের ঝলক মিয়া, আতিকুর রহমান ও রোকেদা বেগম গং।
অন্যদিকে, মুক্তাখাই-চাঁনপুর গ্রামের স্থানীয় বাসিন্দা ও আশ্রায়ণ প্রকল্পের উপকারভোগী মাসুক মিয়া, আলীবুর মিয়া, আব্দুন নুর, আব্দুল কাদির, সামছুন নাহার, কামাল হোসেন, আব্দুল মজিদ, মিনারা বেগম, হারুন মিয়া, দিলোয়ার হোসেন, কবির আহমদ, রিপন মিয়া, জুয়েল মিয়া, চাঁন বানু, সুলতানা বেগম, আমিরুন আক্তার, হেলাল আহমদ, ফিরোজা বেগম সহ প্রমুখ ভিডিও ফুটেজে স্পষ্টভাবে বলেন, ইউপি সদস্য ও প্যানেল চেয়ারম্যান রাসেল আহমদ আশ্রায়ণ প্রকল্পের ঘর নির্মাণের নামে আমরা কোন টাকা দেইনি। একটি গুজববিরোধীরা বলছে আমরা টাকা দিয়েছি বিষয়টি আমরা স্ব-জ্ঞানে বলছি সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন অপ্রচার।
স্থানীয়রা জানান, মুক্তাখাই গ্রামের ৩টি পরিবার যারা মুক্তাখাই সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দপ্তরী তোফায়েল আহমদকে গাছে বেঁধে মারধর করেছিল। এ ঘটনায় মামলার আসামীরা এসব ষড়যন্ত্র পরিচালনা করছে বলে আমরা ধারণা করছি। কারণ, উনার ব্যতিত অন্য পরিবারগুলো স্পষ্ট জবাবদিহি দিচ্ছে ইউপি সদস্য কারো নিকট থেকে ঘর নির্মাণ করে দিবে টাকা নেয় নাই।
স্থানীয় বাসিন্দা মিলন মিয়া বলেন, এই আশ্রায়ণ প্রকল্পের ঘরগুলো ২বছর পূর্বে নির্মাণ করে উপকারভোগীর হস্তান্তর করা হয়। তখন এ ধরণের অভিযোগ উঠেনি। এখন একটি চক্রমহল ইউপি সদস্য রাসেল কে কুলষিত করার জন্য প্রচেষ্টা করছে।
ইউপি সদস্য রাসেল আহমেদ বলেন, আমার পেশাগত ও জনপ্রিয়তার ইমেজকে সংকটে ফেলতে এবং রাজনৈতিক মেরুদণ্ড ভেঙে দিতে এমন মানহানিকর ও অসত্য অভিযোগ তুলে ধরে মিথ্যা সংবাদ প্রকাশ করা হচ্ছে। দপ্তরি তোফায়েল কে আমার দায়িত্ববোধ থেকে চিকিৎসা প্রদান করি এবং সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে আমাকে মামলার সাক্ষী হিসাবে নেওয়া হয়েছিল। আমি ধারণা করছি আসামী পক্ষ ক্ষুদ্ধ হয়ে আমাকে এবং আমার চাচা মুজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে বিভিন্নভাবে মিথ্যা ও বানোয়াট এবং সংবাদ প্রচার করছে। আমি তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জনাই। এবং প্রশাসনের নিকট সুষ্ঠু বিচার চাই।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে শিমুলবাঁক ইউপি চেয়ারম্যান শাহীনুর রহমান বলেন, আশ্রায়ণ প্রকল্পের ঘর নির্মাণে ইউপি সদস্য রাসেল আহমদ কারো নিকট থেকে কোন টাকা নেয়নি। বিষয়টি সম্পূর্ণ বানোয়াট। আমি এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
# শহিদুল ইসলাম রেদুয়ান /২০শে অক্টোবর ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ।