খোশ আমদেদ মাহে রমজান
মো ইফাজ খাঁ
স্টাফ রিপোর্টার মাধবপুর. হবিগঞ্জ সিলেট বিভাগঃ
আজ ১৫ রমজান। হযরত উমর রাদি আল্লাহ তা’আলা আনহু বলেছেন ঃ আমি হযরত রাসুলুল্লাহ (সাঃ) কে একথা বলতে শুনেছি যে, মাহে রমজানে যে ব্যক্তি আল্লাহর জিকির করে আল্লাহ তাকে মাগফিরাত দান করেন এবং রমজানে দুআ করলে তা ব্যর্থ হয়না। রমজানের সিয়াম বছরের অবশিষ্ট ১১ মাস কিভাবে চলতে হবে, কিভাবে চলা উচিৎ, মানুষে মানুষে পারস্পরিক সম্পর্ক ও হৃদয় বন্ধন কেমন হতে হবে, কেমন হওয়া উচিৎ- সেসব কিছুই হাতে নাতে বাস্তব অভিজ্ঞতার অনুরণনে সায়িমকে প্রশিক্ষিত করে গড়ে তোলে। প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম বলেছেন ঃ তোমাদের মধ্যে যে সিয়াম পালন করে সে যেন স্ত্রী গমণ ও কলহ বিবাদ ত্যাগ করে, যদি কেউ তাকে গালি দেয় অথবা তার সাথে কলহ বিবাদ করতে আসে তখন সে যেন তাকে বলে ঃ আমি সায়িম, আমি সায়িম অর্থাৎ আমি রোজাদার, আমি রোজাদার। রমজানের সিয়াম আত্ম অনুভবে নম্রতার ও হৃদ্যতার মূল আবেদন সঞ্চারিত করে। নম্রতা ও হৃদ্যতা ইসলামের মূল নীতির অন্তর্গত। কোরান মজিদে ইরশাদ হয়েছে ঃ অহংকার বশে তুমি মানুষকে অবজ্ঞা করনা এবং পৃথিবীতে উদ্ধতভাবে বিচরণ করোনা, কেননা আল্লাহ উদ্ধৃত অহংকারীকে ভালবাসে না। তুমি হাটার সময় সংযত ভাবে হাটবে এবং কন্ঠস্বর নীচু করবে, স্বরের মধ্যে গাধার স্বরই সবচেয়ে অপ্রীতিকর (সুরা লুকমান ঃ আয়াত ঃ ১৮-১৯)।
প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়া সাল্লাম বলেছেন ঃ তোমাদের মধ্যে যারা অমায়িক তারাই আমার নিকট সব চেয়ে প্রিয়। অন্য এক হাদীসে আছে যে, প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, আল্লাহ ভদ্রতা ও নম্রতাকে ভালোবাসেন। এবং তিনি বিনয়ীকে যা দেন গর্বিতকে তা দেন না।
প্রিয় নবী সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম বলেছেন ঃ এই পৃথিবীতে বিনয়কে খুব হালকা মনে হলেও হাশর দিবসে সৎগুণ হিসেবে ওজনে তা অনেক ভারী হবে। প্রিয়নবী সাল্লাল্লাহু আলায়হি ওয়াসাল্লাম কারো সাথে দেখা হলে আগে সালাম দিতেন এবং তার কুশলাদি জিজ্ঞাসা করতেন। তিনি বলেন, সেই ব্যক্তি সবচেয়ে নিকৃষ্ট যার কটুক্তির ভয়ে লোকজন তার কাছ ঘেসা হয়না। এবং তার সঙ্গে মেলামেশা বন্ধ করে।
সিয়াম পালনের মাধ্যমে বাহ্যিক সংযম যেমন সাধিত হয় তেমনি জৈবিক, মানসিক ও আত্মিক সংযম ও অর্জিত হয়। আত্মিক ও মানসিক তথা আধ্যাত্মিক মানস সমুন্নত করতে হলে নূরের জগতে অবগাহন করে নিজেকে নূরানী বা জ্যোতির্ময় করতে হলে মানবতার চূড়ান্ত মঞ্জিলে উপনীত হতে হলে, সৃষ্টি রহস্যের সকল দিগন্ত উন্মোচিত করতে হলে এবং আল্লাহ জাল্লাশানুহুর নৈকট্য ও সন্তুষ্ঠি লাভ করতে হলে, সত্য সুন্দর আধ্যাত্মিক সড়কের নিষ্ঠাবান পথিক হতে হবে। ইলমে তাসাউফের পথপরিক্রমায় নিজেকে যথাযথভাবে সম্পৃক্ত করে তরিকতের সালিক হতে হবে। ইলমে তাসাউফ ছাড়া পরিপূর্ণ মানুষ হওয়া যায়না। ইলমে তাসাউফ বিহীন জীবন সমুদ্র তলে পরে থাকা নুড়ি পাথরের মতো কিংবা খুশ বিহীন ফুলের মতো।