শুক্রবার, ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৪:৪৫ পূর্বাহ্ন

সিলেটে ২বছর পর ছেলে হত্যার বিচার চেয়ে আদালতে বৃদ্ধ মায়ের মামলা

উত্তর বাংলা
  • আপডেটের সময় : শনিবার, ৭ জানুয়ারী, ২০২৩
  • ৭০ Time View

 

নিজস্ব প্রতিবেদক:
সিলেটে ছেলে হত্যার বিচার চেয়ে প্রায় ২ বছর পর আদালতে নালিশা মামলা দায়ের করেছেন এক সন্তান হারোনো বৃদ্ধ মা।

বিগত রবিবার ০৪ ডিসেম্বর ২০২২ইং তারিখে মৃত কয়েছের বৃদ্ধ মা রেজিয়া বেগম (৬০) বাদী হয়ে পূর্ব বিরোধের জের ধরে তার ছেলেকে হত্যা করা হয়েছে মর্মে এমন গুরুত্বর অভিযোগ এনে ১০ জনের নাম উল্লেখ্য সহ আরোও ৫/৬ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রট ৩য় আদালত, সিলেটে একটি নালিশা মামলা দায়ের করেন, যাহার মামলা নং- দক্ষিণ সুরমা সি/আর- ২৯০/২২ ইং।

মামলার বাদী রেজিয়া বেগম দক্ষিণ সুরমা থানাধীন রুপালী আ/এ বাসা নং- ৫০/৩, বারখলা এলাকার বাবুল মিয়ার স্ত্রী।

দায়েরকৃত নালিশা মামলা সুত্রে অভিযুক্তরা হচ্ছেন- দক্ষিণ সুরমা থানাধীন রোড নং- ০১, বাসা নং- ২০, বারখলা এলাকার মানিক মিয়ার পুত্র রিমন (৩২), রুপালী আ/এ বাসা নং- ২৩, বারখলা এলাকার নিছবা রহমানের পুত্র এজাজুর রহমান কাফি (২৭), রোড নং- ০১, বাসা নং- ২০, বারখলা এলাকার মানিক মিয়ার স্ত্রী রুনা বেগম (৪৫), বাসা নং- ২০, বল্ক- এ, বারখলা এলাকার মছদ্দর মিয়ার পুত্র সেলিম আহমদ (২৬), রুপালী আ/এ বাসা নং- ১৪, বারখলা এলাকার তোয়াহিদ মিয়ার পুত্র জুনেদ আহমদ (৪০), রুপালী আ/এ বাসা নং- ২০, ব্লক- এ, বারখলা এলাকার মছদ্দর মিয়ার পুত্র মিন্টু (৩৫) ও তার ভাই মানিক মিয়া (৫২), রুপালী আ/এ বাসা নং- ২২, বারখলা এলাকার ইদ্রীছ আলীর পুত্র মোঃ লতিফুর রহমান, বারখলা এলাকার মৃত আঃ রাশিদের পুত্র এম.এ ওয়াদুদ (৪৫) ও বারখলা এলাকার ইদ্রীছ আলীর পুত্র মুহিবুর রহমান (৫৫) সহ আরোও অজ্ঞাতনামা ৫/৬ জন।

দায়েরকৃত নালিশা মামলা সুত্রে জানা গেছে- মামলার সাক্ষী ও নিহত কয়েছ আহমদের ভাই সবুজ আহমদের সহিত অভিযুক্তদের জায়গা-জমি নিয়ে পূর্ব বিরোধ ছিলো। নিহত কয়েছ আহমদ ঘটনার তারিখ ও সময় অথাৎ বিগত ২০/০৪/২০২০ইং তারিখ রাত অনুমাণ ১০.৩০ ঘটিকায় সবুজ আহমদের নিকট হইতে টাকা নিয়া গোটাটিকরের উদ্দেশ্যে এসে নিখোঁজ হয়ে যান। তখন করোনা মহামারীর জোরালো প্রার্দুভাব থাকায় তাকে অনেক খুজাখুজি করে না পেয়ে নিকটস্থ থানা দক্ষিণ সুরমায় সাধারণ ডায়েরী করতে গেলে থানা কর্তৃপক্ষ বাদীকে থানা হইতে তাড়িয়ে দেন।

পরবর্তীতে বিগত ২৪/০৪/২০২০ ইং তারিখে থানা মারফতে জানতে পারেন তাহারা অজ্ঞাত একটি লাশ পেয়ে বেওয়ারিশ লাশ হিসেবে করুণার কারণে মানিক পীর কবরস্থানে দাফন করেছেন। তাদের নিকট হইতে দাফনকৃত অজ্ঞাত লাশের ছবি দেখে বাদী নিশ্চিত হন যে এই অজ্ঞাত লাশটি তাদের ছেলে কয়েছের। তাৎক্ষনিক তারা পুলিশ মারফতে জানতে পারেন কয়েছের লাশটি মোগলাবাজার থানাধীন শিববাড়ী পাঁচতলা বিল্ডিংয়ের সামনে হইতে লাশটা উদ্ধার করা হয়েছে। মৃত কয়েছের ছবিতে দেখেন তার ছেলের গাড়ে আঘাতের চিহৃ ও রক্তমাখা মুখ এমনকি পরিহিত শার্ট-প্যান্টের রক্তাক্ত অবস্থা। তাৎক্ষনিক অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে মামলা করতে চাইলে থানা পুলিশ করোনার ভয় দেখিয়ে তাড়িয়ে দেন। করোনার কারণে আদালতেও মামলা দায়ের করতে না পেরে ধৈর্য্য ধরেন বাদী।

গত ১৫/১১/২০২২ ইং তারিখ বিকাল ৪:৩০ ঘটিকায় মামলার সাক্ষী ও নিহত কয়েছের ভাই সবুজ সিলেট সদর সাব রেজিস্ট্রি অফিসে ১নং অভিযুক্তের সঙ্গে কথাকাটাকাটির একপর্যায়ে ১, ২, ৪, ও ৫নং অভিযুক্ত সবুজকে হুমকি দিয়ে বলে যে, “তর ভাই কয়েছ যেভাবে নিখোঁজ হইছে তুইও নিখোঁজ হয়ে যাবি আর তর ভাইয়ের লাশ পাওয়া গেলেও তর লাশ কেউ খোঁজে পাবে না”। এসময় মামলার ২নং সাক্ষী সবকিছু শুনে ও দেখেন। তাদের এহেণ হুমকিতে সবুজ নিজের নিরাপত্তা চেয়ে কোতোয়ালী থানায় একখানা সাধারণ ডায়েরী দায়ের করেন, যাহার নং- ১৯০৯/তাং-১৭/১১/২০২২ ইং ও পূর্বে অন্যান্য কারণে তাদের বিরুদ্ধে দক্ষিণ সুরমা থানায় আরেকখানা সাধারণ ডায়েরী দায়ের করেন, যাহার নং- ১২৮৬/তাং- ২৭/১০/২২ইং। এতে বাদী নিশ্চিত হন যে তার ছেলে কয়েছকে ৮নং অভিযুক্তের হুকুমে ৯ ও ১০নং অভিযুক্তের ষড়যন্ত্রে ১-৭নং অভিযুক্তরা তার ছেলেকে অপহরণ করিয়া অজ্ঞাত স্থানে নিয়া খুন করিয়া লাশ শিববাড়ীতে ফেলে দেয়।

এ ব্যাপারে বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোঃ বদরুল আলম লিটন প্রতিবেদকে আদালতে নালিশা হত্যা মামলা দায়ের করার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান- ১০ জনের নাম উল্লেখ্য সহ আরোও ৫/৬ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করে মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রট ৩য় আদালত, সিলেটে নালিশা মামলাটি দায়ের করলে আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে সিলেট পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)-কে মামলাটি তদন্ত করে আদালতে রিপোর্ট দাখিলের জন্য নির্দেশ প্রদান করেন।

সর্বশেষে মামলার বাদী ও মৃত কয়েছের বৃদ্ধ মা রেজিয়া বেগম নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে তার ছেলে হত্যার প্রকৃত হত্যাকারীদের আইনের আওতায় এনে ‘দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির’ জন্য প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট আকুল আহ্বান জানান।

শেয়ার

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও
© All rights reserved © 2022 Uttorbangla24 live
Design & Develop BY Coder Boss
themesba-lates1749691102