বিশ্বনাথ প্রতিনিধি : দেশের বিভিন্ন স্থানের ন্যায় হাড় কনকনে তীব্র শীত আর ঘন কুয়াশায় সিলেটের বিশ্বনাথের জনজীবনে নেমে এসেছে চরম দূর্ভোগ। হিমেল হাওয়া আর ঘন কুয়াশায় স্বাভাবিক জীবন যাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। বিশেষ করে দুঃস্থ ও ছিন্নমূল মানুষের অবস্থা শীতে কাহিল।
হতদরিদ্র মানুষের জীবনে চরম বিপর্যয় নেমে এসেছে। শীত বস্ত্রের অভাবে ছিন্নমূল মানুষেরা জবুথবু হয়ে কোন মতে শীত থেকে নিজেদের রক্ষা করতে শত চেষ্টা করছেন। গরম কাপড়ের অভাবে অনেকেই রাত জেগে খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারনের চেষ্টা করছেন। শ্রমজীবি মানুষেরা কাজে বের হতে না পারায় তাদের পরিবার নিয়ে অভূক্ত থাকছেন।
ঘন কুয়াশার সঙ্গে কনকনে শীত পড়তে শুরু করেছে। চারিদিকে বইছে হিমেল হাওয়া। আজ শনিবার সকালে আগুন জ্বালিয়ে শীত নিবারণ করতে দেখা গেছে অনেককে। পৌষের এই হাড় কাপানো শীতে মাঝে মধ্যে তীব্র ঘন কুয়াশার কারণে বিকেল থেকে পরদিন ১০-১১টা পর্যন্ত লোকজন ঘর থেকে বের হতে পারেছেন না।
ফলে বোরো ফসলের ভরা মৌসুমে কৃষকেরা ক্ষেতে কাজ করতে পারছেননা। শীতের তীব্রতায় শিশু ও বৃদ্ধ লোকজনের সর্দি, কার্শি, হাঁপানি, হাড় ও বাতের ব্যাথার বেড়ে যাওয়াসহ নানা রোগও উপসর্গ দেখা দেয়ায় তাদের কষ্টের মাত্রা বেড়ে গেছে।
শীতের প্রকোপ বেড়ে যাওয়ায় লেপ-তোশক, ছাদর, সোয়েটারসহ গরম কাপড়ের চাহিদা বহুগুণ বেড়ে যাওয়ায় দামও বৃদ্ধি পেয়েছে। মোটা কাপড়ের দোকানে মানুষের ভীড় লক্ষ্য করা গেলেও দাম বেশি হওয়ায় নিম্ম আয়ের মানুষজন তা কিনতে পারছেননা। উপজেলা সদরে অস্থায়ী পুরনো কাপড়ের দোকানগুলোতে নিম্ম আয়ের মানুষের ভীড় বেড়ে গেছে।
এলাকায় এখনও পর্যন্ত কোন রাজনৈতিক দল শীতার্থ মানুষের পাশে দাড়ানোর খবর পাওয়া যায়নি। এলাকায় প্রচন্ড শীতের দাপট দেখা গেছে। সন্ধ্যার পর থেকে পরদিন সকাল ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত ঘন কুয়াশা ঝড়েছে। কুয়াশার কারণে দিনের বেলায়ও হেডলাইট জ্বালিয়ে যানবাহন চলাচল করেছে।
দিনের বেলা কুয়াশার আড়ালে সূর্য ঢেকে থাকে। গত কয়েকদিন ধরে দুপুরে দুই থেকে তিন ঘণ্টার জন্য সূর্যেও দেখা মিললেও তাপমাত্রা অনেক কম ছিল। বিকেল থেকে হালকা কুয়াশা এবং রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কুয়াশা বেড়ে যায়। এর সঙ্গে যোগ হচ্ছে হিমেল হাওয়া এবং কনকনে শীত।
এব্যাপারে পৌর এলাকার কৃষি শ্রমিক সাদ্দাম হোসেন বলেন, আজ সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি প্রচুর কুয়াশা পড়ছে এবং খুব বেশি শীত। তাই বোরো জমিতে চারা রোপনের কাজে যেতে পারিনি।
ব্যাটারী চালিত রিকশা চালক কাজল মিয়া বলেন, তীব্র শীতের মধ্যেও গাড়ি নিয়ে বের হয়েছি। কিন্তু যাত্রী একে বারেই নেই। আজ সকাল সাড়ে ১১টা পর্যন্ত কোনো যাত্রী পাইনি। শীতের কারণে লোকজন বাসা-বাড়ি থেকে বের হচ্ছে না।