স্টাফ রিপোর্টারঃ
রাজশাহীর বাঘা উপজেলার বাউসা ইউনিয়নের দীঘা বাজারে নিজ দোকানে নির্মমভাবে খুন হয়েছিলেন সাইকেল মেকানিক খাকছার আলী (৫২) । গত ১৭ সেপ্টেম্বর সাপ্তাহিক হাটের দিন দুপুর সাড়ে ১২ টার সময় খুন হলেও পাওয়া যায়নি কোন প্রত্যক্ষদর্শী সাক্ষী। ধারালো অস্ত্রের আঘাতে খাকছার আলীর মৃত্যুর পর নিজ দোকানেই পড়েছিল রক্তে রঞ্জিত নিস্তব্ধ নিথর দেহটি। এমন নৃশংস হত্যার ঘটনায় এলাকাবাসী স্তম্ভিত হয়ে যায়।
জানা যায়, ক্লু-লেস এই হত্যা মামলার তদন্তের দায়িত্বে ছিলেন, বাঘা থানার পরিদর্শক তদন্ত সবুজ রানা। তবে ঘটনার পরদিন পুলিশ সুপার সাইফুর রহমান পিপিএম ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে দ্রুত ঘটনার রহস্য উদঘাটনের নির্দেশ দেন। তদন্তে নিহত ব্যক্তির কোন শত্রু, ব্যবসায়ীক প্রতিদ্বন্দ্বী, পারিবারিক বিরোধ কিংবা জমি সংক্রান্ত বিরোধের কোনো তথ্যও পাওয়া যায়নি। তদন্ত শেষে সম্ভাব্য সকল বিষয় বিশ্লেষণ করেও কিছুই পাওয়া যায়নি। এভাবে প্রায় তিন সপ্তাহ কেটে যায়। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ জানতে পারে ঘটনার পর থেকে দিঘা আঠালি পাড়া গ্রামের আসাদুল ইসলামের ছেলে আবীরের (১৮) সন্দেহজনক আচরণ করছে। শুক্রবার (৬ অক্টোবর) বিকাল সাড়ে ৪ টার সময় তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়। জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে আবীর পুরো ঘটনার বর্ণনা দিতে থাকে। আবির জানায়, ঘটনার দিন দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সে ঘাস কাটার জন্য হাসুয়া নিয়ে বের হয়ে খাকছারের দোকানে যায়। খাকছার তখন দোকানে একাই ছিলেন এবং নিজের জন্য পান বানাচ্ছিলেন, পাশেই বিকট শব্দে করাত কল চলছিল কাঠমিলে। পাড়া সম্পর্কে দাদা খাকছারের কাছে সে ১০০ টাকা চায়, কিন্তু সে টাকা না দিয়ে গালি দেয়। এতে রাগান্বিত হয়ে আবীর হাতে থাকা হাসুয়া দিয়ে খাকছারের ঘাড়ে সজোরে একটি কোপ মারে, এতে তখনই তার মৃত্যু হয়। পাশে করাত কলের শব্দের কারনে কেউ শুনতে পায়নি। সে হাসুয়া নিয়েই বাজারের পিছন দিয়ে ঘাস কাটতে চলে যায়।
এ বিষয়ে আবিরের চাচা শহিদুল জানান, মাদকাশক্ত আবির বেশ কয়েক দিন ধরে পরিবারের সকলের সাথে উশৃংখল আচরণ করতে থাকে। তার এমন আচরণে অতিষ্ট হয়ে আবিরের বাবা সহ আমরা সবাই মিলে তাকে ঘরে আটকে রাখি। খবরব পেয়ে পুলিশ এসে আমার বাবার পাট কাটার কাজে ব্যাবহৃত হাসুয়া সহ তাকে থানায় নিয়ে যায় । খাকছার হত্যার বিষয়ে জানতে চাইলে শহিদুল বলেন, আমার ভাতিজা আবির মাদক সেবন করলেও হত্যার মতো এমন বড় অপরাধ সে করতে পারে না ।
এ বিষয়ে বাঘা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) খায়রুল ইসলাম মুঠোফোনে জানান,গত কাল আবিরকে থানায় এনে জিজ্ঞাসাবাদ কালে সে সাইকেল মেকার খাকছার হত্যার দায় স্বীকার করে। পরে আজ শনিবার বিকেলে। তাকে রাজশাহীর চিপ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে নেওয়া হলে বিচার লিটন হোসেনের সামনে দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে।