উত্তর বাংলা সংবাদ
আমদানি শুল্ক ও বাড়তি কাস্টমস ডিউটি প্রত্যাহারের দাবিতে দোয়ারাবাজারে সোনালী চেলা শুল্ক স্টেশন দিয়ে চুনাপাথর আমদানি অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ রয়েছে।
বুধবার (১৬ আগস্ট) থেকে চুনাপাথর আমদানি বন্ধ রেখেছে ব্যবসায়ীরা। এতে কর্মহীন হয়ে পড়েছে হাজার হাজার পাথর শ্রমিক।
লাফার্জহোলসিম সিমেন্ট কোম্পানিকে সুবিধা দিতে এবং তাদের পরামর্শে এ শুল্ক বাড়ানো হয়েছে বলে ব্যবসায়ীদের অভিযোগ। ডলার-সঙ্কটে এনবিআরের এমন সিদ্ধান্ত আত্মঘাতী বলেও দাবি ব্যবসায়ীদের।
সাংবাদিকদের সাথে আলাপকালে দোয়ারার সোনালী চেলা ও ছাতকের ইছমাতী শুল্ক স্টেশনে আমদানিকারক একাধিক ব্যবসায়ী এ অভিযোগ করেন।
সুনামগঞ্জের ছাতক-দোয়ারাবাজার উপজেলায় দু’টি শুল্ক স্টেশন ছাতকের ইছামতী ও দোয়ারার চেলা স্টেশন দিয়ে মূলত চুনাপাথর আমদানি হয়। ছাতক-দোয়ারাবাজার দুই উপজেলার কয়েক হাজার শ্রমিক এ কাজে জড়িত। দুই উপজেলার ৮০ ভাগ মানুষের জীবিকা নির্বাহের একমাত্র মাধ্যম এটি।
শনিবার (১৯ আগস্ট) দুপুরে চেলা ও ইছামতী শুল্ক স্টেশনে গিয়ে নিত্যদিনকার ব্যস্ততা চোখে পড়েনি। ভারত থেকে কোনো পাথরবাহী নৌকা বাংলাদেশে আসছে না। স্থবির হয়ে আছে সুনামগঞ্জের প্রধান দুই শুল্ক স্টেশন। ঘাটে ঘাটে বাধা রয়েছে শত শত পাথরবাহী নৌকা। এতে কর্মহীন হয়ে পড়েছে হাজার হাজার শ্রমিক। বিপাকে পড়েছে ক্ষুদ্র পাথর ব্যাবসায়ীরা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চেলা শুল্ক স্টেশনের কয়েকজন ব্যবসায়ী জানান, চুনাপাথরের ডিউটি (ইমপোর্ট অ্যাসেসমেন্ট রেট) সাড়ে ১১ ডলার থেকে বাড়িয়ে সাড়ে ১৩ ডলার করা হয়েছে। সোমবার ব্যবসায়ীদের শুল্ক বৃদ্ধির বিষয়টি অবগত করে কাস্টমস বিভাগ।
নতুন ডিউটি নির্ধারণ নিয়ে কাস্টমস কর্মকর্তাদের সাথে ব্যবসায়ীদের আলোচনাও হয়েছিল। ব্যবসায়ীরা আন্দোলন শুরু করায় কাস্টমসের পক্ষ থেকে চুনাপাথরের ডিউটি সাড়ে ১২ ডলার করা হয়। কাস্টমসের পক্ষ থেকে আমদানি শুল্কও বাড়ানো মানতে নারাজ ব্যবসায়ীরা।
ছাতক লাইমস্টোন ইমপোর্টার্স অ্যান্ড সাপ্লায়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও সুনামগঞ্জ চেম্বারের পরিচালক সেলিম আহমদ চৌধুরী জানান, এমনিতেই আমদানিকারকদের ব্যবসার অবস্থা খুব খারাপ। তার ওপর সিলেট কাস্টমসের পক্ষ থেকে মৌখিকভাবে প্রতি টনে দুই ডলার ডিউটি বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে। এ কারণে ট্রাক প্রতি ডিউটি ১,২০০ থেকে ১,৩০০ টাকা বেড়ে যাবে। এ অবস্থায় তারা বুধবার থেকে ইছামতী ও চেলা শুল্ক স্টেশন দিয়ে অনির্দিষ্টকালের জন্য বোল্ডার ও চুনাপাথর আমদানি বন্ধ রেখেছেন। বিষয়টি সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত পাথর আমদানি বন্ধ থাকবে।
কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেট সিলেটের উপকমিশনার (সদর দফতর) মো: সোলাইমান হোসেন জানান, সব শুল্ক স্টেশন ও স্থলবন্দরে ভারতীয় মালপত্র গ্রহণ করার জন্য তারা প্রস্তুত রয়েছেন। ডলারের মূল্যস্ফীতির কারণেই শুল্ক বেড়েছে দাবি এই কাস্টমস কর্মকর্তার। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের নির্দেশনার আলোকেই মূলত অ্যাসেসমেন্ট ভ্যালু বাড়ানো হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, ‘ব্যবসায়ীদের সাথে তিন দফা আলোচনা করেই এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। তবুও এ নিয়ে টেবিলে আলোচনার সুযোগ রয়েছে। লাফার্জ সিমেন্টকে সুবিধা দেয়ার বিশেষ কোনো সুযোগ আমাদের হাতে নেই।