স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট
নারী কনেস্টবলদের নিয়ে অফিস কক্ষেই নগ্ন ভিডিও দেখেন ইন্সপেক্টর। একাধিক নারী কনেস্টবলদের সঙ্গে ইন্সপেক্টরের এমন সম্পর্কে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। আবার আর কেউ প্রতিবাদ করলে তার ওপর নেমে আসে নানা নির্যাতন এমনকি চাকুরিচ্যুতির হুমকি।
রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিেেশর রিজার্ভ অফিসের আর ও আই ফারুক হোসেনের বিরুদ্ধে এমন গুরুতর অভিযোগ করা হয়েছে। কমিশনার বরাবর এই অভিযোগ করেছেন খোদ কয়েকজন এস, আই, এএসআই এবং কনেস্টবলরা।
অভিযোগের বিষয়ে আর আই ফারুক হোসেন বলেন, এটা মিথ্যা অভিযোগ।
সম্প্রতি লিখিত আকারে দায়ের করা অভিযোগে বলা হয়েছে, রিজার্ভ অফিসের পোষ্টটি গুরুত্বপূর্ণ। এসআই, এএসআই এবং কনেস্টবলদের নানা ছুটিসহ নানা সুযোগ সুবিধা দেখভাল করেন আর ও আই। তার সুপারিশের ভিত্তিতে নিম্ন পদস্থদের এসব কার্যকর হয়। ২০২১ সালের ৯ মে এ পদে যোগদান করেন ইন্সপেক্টর ফারুক হোসেন। তার যোগদানের পর থেকেই নিজস্ব সিন্ডিকেট গড়ে তোলেন। কয়েকজনকে হাত করে বাকিসবদের প্রকার জিম্মি করে ফেলেছেন। বিশেষ করে ছুটির বিষয়ে তার নিকটে গেলেই ঘুষ বা উপঢৌকন না পেলে ক্ষিপ্ত হয়ে যান। অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করতেও ছাড়েন না। স্ত্রীর গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় ছুটি চাইতে গিয়ে হেনস্থার শিকার হয়েছেন এমনও অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে, ইন্সপেক্টর ফারুক তার অফিসেই নারী কনেস্টবলকে নিয়ে নগ্ন ভিডিও দেখেন। একাধিক নারী কনেস্টবলদের সঙ্গে তার এ ধরনের অসামাজিক আচরণ পুরো অফিস জুড়েই ওপেন সিক্রেট। আবার অনেক নারী কনেস্টবল ছুটি চাইতে গিয়ে হেনস্থার শিকার হয়েছেন। তার হেনস্থার শিকার হয়ে অনেকেই কাঁদতে কাঁদতে অফিস থেকে বের হতেও দেখেছেন অনেকেই।
অভিযোগে বলা হয়, ‘কনস্টেবল মোঃ আজিজুল রিজার্ভ অফিসে কর্মরত গত ২০২২ সালের ৬ নভেম্বর তার স্ত্রী গর্ভবর্তী থাকার কারনে জরায়ু দিয়ে অনাবরত রক্ত বের হতে থাকলে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে স্ত্রীকে হাসপাতালে ভর্তি করে। এরপর কনস্টেবল মোঃ আজিজুল হাকিম ছুটির জন্য একটি আবেদন লিখে রেখে যায়। এসআই মোঃ জাহিদ হোসেন আবেদনটি আর ও আই, এস এম ফারুক হোসেন এর কাছে নিয়ে গেলে বলে কি লিখেছে হয়নি বলে অনেক রাগারাগি করে। এরপর এসআই মোঃ জাহিদ হোসেন কনস্টেবল আজিজুল হাকিম বলে আপনি তাড়াতাড়ি আসেন। স্যার অনেক রাগারাগি করছে দেখা করেন। কনস্টেবল মোঃ আজিজুল হক তাড়াহুড়া করে অফিসে এসে, এস এম ফারুক হোসেন কে তার রুমে প্রবেশ করে। এস এম ফারুক হোসেন কোন কথা না বলে কিছুক্ষন পর আমি কি করবো? কনস্টেবল মোঃ আজিজুল হক বলে স্যার আমি বুঝতে পারিনী এর আগে এইভাবে লিখেছি বলার সাথে সাথে রগান্তিত হয়ে বাজে আচরণ করে। কনস্টেবল আজিজুল হাকিম কে বিভিন্ন ভাবে হুমকি দিয়ে বলে কি ভাবে চাকুরী করবা আমি দেখে নিবো। গত ২ জানুয়ারি কনস্টেবল আজিজুল হাকিম তার নিকট গেলে কাছে ছুটির জন্য গেলে অভিযুক্ত পুলিশ বলে আপনার সমস্যা তো লাগায় থাকে প্রতিউত্তরে কনস্টেবল আজিজুল হাকিম বলে স্যার আগের ছটিত হাসপাতালে কেটেছে ঠিক আছে। এরপর গত ৩ জানুয়ারি কনস্টেবল আজিজুল হাকিম ছুটিতে যায়। ছুটি শেষে কনস্টেবল আজিজুল হাকিম অফিসে যোগদানের পর সন্ধায় অফিসে যায় । আর ও আই ফারুক হোসেনের অফিস খুলে দেওয়ার জন্য প্রস্তুত আছে। আগে খুলে রাখলে অনেক সময় কুত্তা ঢুকে যাওয়ার জন্য খুলে রাখেনি । এরমধ্যে হটাৎ ফারুক হোসেন অফিসের সামনে চলে আসে এবং দেখে যে তার রুমের দরজা তালা দেওয়া । তালা দেখে তিনি রেগে আগুন কনস্টেবল আজিজুল হাকিম কে অকথ্য ভাষায় কুত্তার বাচ্চা গালিগালাজ শুরু করে । কনস্টেবল মোঃ আজিজুল হক ছোট চাকুরী করে বলে, অনেক কষ্ট পেয়েও চাকুরী করার কারণে সহ্য করে থেকে যায়। কনস্টেবল মোঃ আজিজুল হক তার চাপা ক্ষোভের কথা কাউকে বলতে পারেনি। কনস্টেবল আজিজুল হাকিম এর মত এমন অনেকেই আছে যারা নিরবে সহ্য করে যাচ্ছে । আরএমপি রিজার্ভ অফিসে এএসআই মোঃ মাসুদ চাকুরীর ভয়ে সব কষ্ট মুখ বুজে ধৈর্য্যরে সাথে মেনে চলে গেছে। এএসআই নিঃ মোঃ হামিদুর রহমান আরএমপি রিজার্ভ অফিসে কর্মরত তার শিশু বাচ্চা হাসপাতালে ভর্তি করে রেখেছে। অফিসে আসতে একটু দেরী হলে তাকেও অকথ্য ভাষায় কুত্তার বাচ্চা বলে গালি দেয়। এএসআই নিঃ মোঃ হামিদুর রহমান তার শিশু বাচ্চা গত ১ ফেব্রুয়ারি থেকে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে।
গত ৭ ফেব্রুয়ারি নারী কং/২৬০ মোসাঃ হিরা খাতুন ছুটি চাইলে ইনচার্জ না থাকায় কং/৫০৬২ মোঃ মনজুর হোসেন আর ও আই এস এম ফারুক হোসেন এর কাছে নিয়ে যায়। তাকে অকথ্য ভাষায় মাদারচোদ বলে গালিগালাজ করে। নারী এসআই মোসাঃ শাহানার খাতুন কে কি বলেছে সে কাঁদতে কাঁদতে বেরিয়ে আসে। আর ও আই কক্ষে গিয়ে তার কক্ষে বসে নারী এসআই মোসাঃ শাহানার খাতুনও নারী কং/৬০ মোসাঃ হিরা খাতুনও কান্না কাটি করতে করতে অফিস থেকে বেরিয়ে আসে।
ফারুক হোসেনের সিন্ডিকেটে যারা : নিন্নক্ত অফিসার ও ফোর্সদের কাছ থেকে বিভিন্ন ভাবে অবৈধ সুবিধা গ্রহন করে থাকেন বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। এরা হলো এএসআই (নিঃ) শামসুজ্জামান আরও অই কে খুশি রাখার জন্য বাসা বাড়ি থেকে আমের জুস করে ও ভাল খাবার এনে দেয় এবং বাসা থেকে তাকে মোটরসাইকেলে করে আনা নেয়া করে থাকে । তার বিনিময়ে অফিসিয়াল সুযোগ সুবিদা নিয়ে থাকে । এএসআই (নিঃ) মোঃ তারিক এর কাছ থেকে প্রতি সপ্তাহে এক প্যাকেট বেনসন সিগারেট নিয়ে থাকে । এএসআই (নিঃ) আপেল, এর কাছ থেকে প্রতি সপ্তাহে এক প্যাকেট বেনসন সিগারেট নিয়ে থাকে। কং/১৭৩৩মোঃ আব্দুল ওহাব, এর মাধ্যমে বাসের টিকিট বেশ কয়েক বার করায়ে নিয়ে অর্ধেক টাকা দেয়, বাকিটা আব্দুল ওহাব দিলেও পরে আর দেয় না ১৩৫০/-টাকা পাবে। কং/৫০৬২ মঞ্জুরুল ইসলাম এর কাছ থেকে সপ্তাহে ৬০০-৭০০টাকা নিয়ে থাকেন। কং/১০৫৩ মোঃ মোফাজ্জাল হোসেন, ছুটি যেতে চাইলে তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে পরে তাকে ছুটি ছাড়ে। কং/৪৩১১ মোঃ শফিকুল ইসলাম, এর কাছ থেকে প্রতি সপ্তাহে এক প্যাকেট বেনসন সিগারেট নিয়ে থাকে। কং/১০৩০৫ মোঃ জিলাল, এর কাছ থেকে সপ্তাহে ৭০০-৮০০ টাকা নিয়ে থাকেন । কং/৭২৮মোঃ শাহীনুর মিয়া, এর কাছ থেকে সপ্তাহে ৯০০-১০০০ টাকা নিয়ে থাকেন। কং/২৮০৮ মোঃ মানিক , আরও অই এর বাসার কাচা বাজার করে দেয় বাজার বাবদ ১৭ হাজার টাকা পাবে দেয় না । কং/২৯৭৪ মোঃ শরিফুল, আরও অই এর বাসার কাচা বাজার করে দেয় বাজার বাবদ ৫২৫টাকা পাবে দেয় না। কং/ ২৬৮৭ মেহেদী এর কাছে মোবাইল নেয়ার জন্য চাপ দিতে থাকে। কং/৯০৯ মোঃ সাদ্দাম, চাপাই সিমান্ত দিয়ে ভারত থেকে চোরাইদামী মোবাইল কমদামে পাওয়াযায়। সেই সুবাদে মোঃ সাদ্দাম একটি মোবাইল ১৭ হাজার টাকা দামের এনে দিলে আরও আই তাকে টাকা দিবো বলে দেয় না, আবার নাও বলে না সে ভয়ে কিছু বলতেও পারছে না। কং/২০৮৩ মোঃ আঃ আজিজ আরও আই ফারুক হোসেন কে বাসা থেকে আনা নেওয়া কাজে নিয়োজিত থাকে । এসআই ও মুন্সিদের বাচানোর জন্য আরও আই ফারুক হোসেন ২০ হাজার টাকা ঘুষ নিয়ে বিষয়টি নিয়ে প্রতিবেদন দাখিল করেনি বলে জানা যায়। আরো মাষ্টাররোল নারী এসআই মোসাঃ শানাহারা কে মাষ্টার রোলের ২য় ভলিয়মে ব্রাশ নম্বর ১ হতে ৩২১ পর্যন্ত ফাকা থাকার কারণে নিরুপন করে উর্ধ্বতন প্রতিবেদন দাখিল করেননি । এএসআই (নিঃ) মোঃ হামিদুর রহমান আরএমপি রিজার্ভ অফিসের প্রসেডিং শাখায় কর্মরত আছে। সমান্য বিষয় নিয়ে তাকে অশ্রিল ভাষায় ও বাবা মা তুলে গালিগালাজ করেছে । এএসআই মোঃ রহিদুল ইসলাম সার্ভিস বইয়ে কাজ করে অনেক দিন আগে তার বদলী হলেও কাজের তাগিদে তাকে ছাড় পত্র দেয়নি। বদলীর আদেশ বাতিল করার জন্য আরও আই এস এম ফারুক হোসেন কে ২০ হাজার টাকা দিয়েছে । এএসআই মোঃ মাসুদ এর কাছে মাসোহারা হিসেবে অবৈধ অর্থের ইঙ্গিত করলে মাসুদ দিতে অপারোগতা জানালে তাকে ন্যায় অন্যায় ভাবে অনেক কথা শুনিয়ে দেয়। আরও আই এস এম ফারুক হোসেন অফিসের ভিতরে সবার সামনে অকথ্য ভাষায় দেয় । এএসআই মোঃ মাসুদ চুপ থেকে চলে যায়। পরে সামন্য বিষয় নিয়ে মোবাইল ফোনে তাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে।’
পুলিশ বাহিনী একটি সু-শিক্ষিত ও সু-সৃঙ্খল বিধায় এমন অশভোন আচারনে অফিসের প্রায় সকলে ভিতরে আকটা চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। কেউ কিছু বলতে পারছে না, সইতেও পারছেনা । বিষটি সুষ্ঠ তদন্তের মাধ্যমে প্রমানিত হলে শাস্তিমূলক ব্যাবস্থা গ্রহনের দাবি জানিয়েছেন অভিযোগকারী পুলিশের সদস্যরা।
এদিকে রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের মুখপাত্র অতিরিক্ত-উপ-পুলিশ কমিশনার রফিকুল ইসলাম বলেন, এাঁ পুলিশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। এ বিষয়ে কথা না বলাটাই সমুচিন হবে।