মিনহাজুল হক বাপ্পী,লালমনিরহাট জেলা প্রতিনিধি:
বিড়ানী সরকারী বিদ্যালয় লালমনিরহাট আদিতমারী উপজেলার সাপ্টিবাড়ী ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডে বিরানী সরকারী বিদ্যালয়ের অবস্থান। নাম থাকা সত্বেও বিদ্যালয়ে কোন সীমানা প্রাচীর নেই, সবচেয়ে দুঃখের বিষয় হল কোন টয়লেট বাথরুম নেই। বিদ্যালয়টির পশ্চিমে একটি কমিটি ক্লিনিক ও দক্ষিণে একটি খাল এবং পূর্বে একটি পাকা রাস্তা রয়েছে। পাঠদান ও ফলাফল ভালো হলেও অবকাঠামো ও পরিবেশের দিক থেকে বিদ্যালয়টি নাজুক অবস্থায় রয়েছে। বিড়ানী স্কুলের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের যে সুযোগ-সুবিধা থাকা উচিত তা নেই। বিদ্যালয়টি শুধু নামেই ‘বিড়ানী বিদ্যালয়’। এটি দেশের সবচেয়ে অবহেলিত স্কুল ভবন বলে মনে হচ্ছে।
১৯৬৯ সালে প্রতিষ্ঠিত, ১৯৮৬ সালে বিদ্যালয়টি জাতীয়করণ করা হয়। ১৯৯৪ সালে, এই বিদ্যালয়টি একটি ছাদ বিশিষ্ট ভবন নির্মাণ করা হয়। ভবনটি ২০১৯ সালের অক্টোবরে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয় এরপর তিন কক্ষ বিশিষ্ট একতলা ভবনের একটিতে এবং অন্যদিকে টিনশেড দুটি কক্ষে পাঠদান করা হচ্ছে। তিনটি কক্ষের এই ভবনটিকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। নতুন ভবন নির্মাণ না হওয়ায় ঝুঁকিপূর্ণ একটি পরিত্যক্ত ভবনে পাঠদান চলছে। এছাড়া আসবাবপত্র ও শ্রেণিকক্ষের অভাব রয়েছে। বিদ্যালয়ের মাঠও ভালো নয়। ফলে শিক্ষার্থীরা খেলাধুলা করতে পারছে না।
বিদ্যালয়ে প্রবেশের কোনো পথ নেই। সরেজমিনে দেখা যায়, বিদ্যালয়টি সাপ্টিবাড়ী মহাসড়ক থেকে ভেলাবাড়ি যাওয়ার পথে পিস রোডের সাথে উত্তরে মোড়ে অবস্থিত। স্কুলের সামনে একটি ক্লিনিক দুই পাশে পাকা রাস্তা।
স্থানীয় লোকজন, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, একতলা ভবনের তিনটি কক্ষ শ্রেণীকক্ষ স্বল্পতার কারণে পরিত্যক্ত, কোনো একটিতে কোনো ধরনের ক্লাস বা মাঠে নেওয়া হচ্ছে। আরেকটি কোটরা কক্ষে চেয়ার-টেবিল, বইসহ বিভিন্ন পুরস্কার রাখা আছে অফিস কক্ষে। প্রধান শিক্ষকেরও আলাদা কক্ষ নেই। এ ভবনে ১টি কক্ষ ও দুটি পৃথক টিনশেড কক্ষে ঝুঁকি নিয়ে পাঠদান করা হচ্ছে।
বিদ্যালয় ভবনের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘সব সময় ভয়-আতঙ্ক থাকে। আমাদের শ্রেণিকক্ষের সংকট খুবই বেশি। চেয়ার-বেঞ্চ নেই, তাই ক্লাসে স্তূপ করে বসে থাকতে হয়।
একই বিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির শিক্ষার্থীরা বলেন, আমাদের বিদ্যালয় মহাসড়কের পাশে পাকা সড়কের ওপর। তাই রাস্তা পার হওয়া কঠিন। সবচেয়ে দুঃখের বিষয় হলো টয়লেট বাথরুম নেই, মানুষ কতবার ঘরে গেলে কাপড় নষ্ট করে। এছাড়াও, আমাদের এখানে সীমানা প্রাচীর নেই, তাই গাড়ির হর্ন সহ বিভিন্ন শব্দ রয়েছে।
তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীরা জানান, ক্লাসে একটি বেঞ্চে ৫ জনের বেশি বসতে হবে। এটি পড়া এবং লেখা উভয় সমস্যা সৃষ্টি করে।
অভিভাবকরা জানান, বিদ্যালয়ের অবকাঠামো ও পরিবেশ দেখে বোঝার উপায় নেই, এটি একটি সরকারি বিদ্যালয়। অবকাঠামো, শ্রেণিকক্ষের স্বল্পতা, স্যানিটেশনসহ নানা সমস্যার কারণে বিদ্যালয়টির বেহাল দশা।
পাকা রাস্তা ক্লিক স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা ফরিদা ইয়াসমিন জানান যে তিনি ২৫ জুলাই ২০১৮ এ স্কুলে প্রধান শিক্ষক হিসাবে যোগদান করেন। এই বিদ্যালয়ে ছাত্র সংখ্যা ১৪৫ এর বেশি। চারটি পরিত্যক্ত, জরাজীর্ণ ও বিপজ্জনক কক্ষে পাঠদান করা হয়। চলছে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে। এ বিদ্যালয়ের অবকাঠামো, শ্রেণীকক্ষ ও সীমানা প্রাচীর নির্মাণ অপরিহার্য হয়ে পড়েছে। নতুন ভবন নির্মাণের জন্য একাধিকবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও কোনো লাভ হয়নি।
আদিতমারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম খন্দকার জানান, আমাদের কাছে কেউ কোনো অভিযোগ বা জানায়নি
এ বিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা বলেন, প্রধান শিক্ষককে খোঁজখবর নিতে বলা হয়েছে। নতুন ভবন নির্মাণের জন্য অধিদপ্তরে আবেদন করা হয়েছে