জান্নাতুল সাফিঃ-ব্রাহ্মণবাড়িয়া,নবীনগর প্রতিনিধি....ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর পশ্চিম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নূরে আলমের বিরুদ্ধে ইউনিয়ন পরিষদের কর আদায়ের নামে জনসাধারণের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
মঙ্গলবার(১৪/০২) এলাকায় গিয়ে দেখা যায় ওই ইউনিয়নের প্রতিটি বাড়ি বাড়ি গিয়ে জেলা প্রশাসকের ‘খন্ডকালিন কর আদায়কারি’ পরিচয় দিয়ে মাসুদ নামে এক ব্যক্তি বিগত ৫ বছরের কর আদায় করছেন। খন্ডকালীন কর আদায়কারী পরিচয় দানকারী ওই ব্যক্তি তার আইডেন্টটি কার্ড বা জেলা প্রশাসকের অনুমোদন পত্র দেখাতে পারেননি। সাবেক জনপ্রতিনিধিসহ এলাকার সাধারণ জনগন অভিযোগ করছেন, চেয়ারম্যান নূরে আলম তার লোক দিয়ে জেলা প্রশাসনের নাম ভাঙ্গিয়ে ভয়ভীতি দেখিয়ে বিগত পাঁচ বছরের পরিশোধিত ‘বাস্তভিটার কর’ আদায় করছে। অবশ্য চেয়ারাম্যান কর আদায়ের ব্যাপারে তার কোন এখতিয়ার নেই জানিয়ে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
জানা যায়,নবীনগর পশ্চিম ইউনিয়ন পরিষদের কর আদায়ের রশিদ বহিতে বিগত ২০১৭-১৮,১৮-১৯,১৯-২০,২০-২১,২১-২২ এই পাঁচ অর্থ বছরের বাস্তভিটা কর প্রতিটি বাড়ি ঘরের শ্রেনীভেদ অনুযায়ী ৩০০ থেকে ২০০০ টাকা করে আদায় করছে। অথচ ইউনিয়ন পরিষদের কর আদায়ের সরকারি তথ্য মোতাবেক বিগত ২০১৭-১৮ থেকে ২১-২২ পাচঁ অর্থ বছরের কর পরিশোধিত রয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদের বিধি অনুযায়ী কর আদায়ের রেজিস্ট্রার বহি শুধু এক অর্থ বছরের জন্য এবং কর আদায়ের বিগত বছরের রশিদ বহি তাদের নিজ নিজ পরিষদে রেজিস্ট্রার স্টকে সংরক্ষিত থাকে। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের ইউনিয়ন পরিষদের বার্ষিক আয়-ব্যায়ের বিবরণীতেও প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদের সকল তথ্য আলাদাভাবে হালনাগাদ করা হয়েছে। এরপরও জনগননের কাছ থেকে জোর পূর্বক কর আদায় করা হচ্ছে। এ নিয়ে এলাকায় জনসাধারণে ক্ষোভের সৃষ্টি হয় তারা বলছেন, বিগত চেয়ারম্যান গন বে-আইনিভাবে জোরপূর্বক কোন কর চাপিয়ে দেয়নি। জনগনের কথা চিন্তা করে সমন্বয়ের মাধ্যমে বিধি মোতাবেক সরকারি কোষাগারে তারা কর জমা দিয়েছে।
৯ নং ওয়াডের বাসিন্দা মজনু মিয়া জানান,বিগত সময়ে আমরা এমন দেখেনি, তারা আমার কাছ থেকে জোরপূর্বক ৫ বছরের কর আদায় করেছে।
এ ব্যাপারে ৯ নং ওয়ার্ডের অপর এক বাসিন্দা বাকির হোসেন বলেন,আমার ভাই ঘর তুলেছে পাঁচ মাস হয়েছে কিন্তু আমার কাছ থেকে তারা জোরপূর্বক ৫ বছরের কর আদায় করেছে।
২নং ওযার্ডের ইউপি সদস্য তাজুল ইসলাম বলেন,আমাদের অজান্তে বে-আইনীভাবে চেয়ারম্যন বিগত পাঁচ বছরের টাকা তুলছে যা সে ব্যক্তিগতভাবে টাকা আত্মসাৎ-এর জন্য করেছে। আমরা নির্বাচিত হয়েছি ১ বছর হলো,বিগত চেয়ারম্যান তাদের আমলের কর সমন্বয় করে পরিশোধ করে দিয়ে গেছে।
এ ব্যাপারে সাবেক চেয়ারম্যান ফিরোজ মিয়া বলেন,তিনি এবং তার পূর্বের সকল চেয়ারম্যান গন সাধারণ জনগণের কথা চিন্তা কর সমন্বয় করে কর পরিশোধ করে দিয়েছেন। চেয়ারম্যান টাকা আত্মসাৎ-এর জন্য জনগনের উপর চাপ দিয়ে এ কর আদায় করছে। এ কর আদায় নিয়ে জনগনের মাঝে ক্ষোভের সৃস্টি হয়। সংঘর্ষের আশংকা বিদ্যমান রয়েছে।
এ ব্যাপারে চেয়াররম্যান নূরে আলম কর আদায়ের ব্যাপারে তার কোন এখতিয়ার নেই জানিয়ে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ অস্বীকার করে এ প্রসঙ্গ এড়িয়ে এ প্রতিনিধিকে তার অফিসে চায়ের আমন্ত্রন জানান।
এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক মো.শাহগীর আলম কে তাঁর সরকারি ০১৭৩০৪৪৯৬০ নাম্বারে বার বার যোগাযোগ করেও পাওয়া যায়নি। ক্ষুদেবার্তা পাঠালে কোন জবাব দেননি। তবে জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি নবীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা একরামুল ছিদ্দিক বলেন, আমার জানা মতে জেলা প্রশাসক অফিস থেকে কাউকে কর আদায়ের জন্য পাঠানো হয়নি । জেলা প্রশাসক মহোদয় আপনার ক্ষুদে বার্তা মাধ্যমে অবগত হয়ে আমাকে বিষয়টি খতিয়ে দেখার নির্দেশ দেন।