ডেস্ক নিউজঃ
ছাতকে প্রবাসীর বাড়িতে দূর্ধর্ষ ডাকাতি সংঘটিত হয়েছে। ডাকাতরা নগদ টাকা,পাউন্ড, স্বর্ণালংকার, মোবাইল ফোন সহ ২০ লক্ষাধিক টাকা মুল্যের মালামাল লুঠ করে নিয়ে যায়। সংঘবদ্ধ সশস্ত্র ডাকাত দলের হামলায় গৃহকর্তাসহ ৭ ব্যক্তি আহত হয়েছে। ডাকাতদের হামলায় আহতদের সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ধীন করা হয়েছে। ডাকাতি করে পালানোর সময় জনতা ধাওয়া করে অস্ত্র সহ ৪ ডাকাতকে আটক করেন। সোমবার গভীর রাতে উপজেলার গোবিন্দগঞ্জ সৈদেরগাঁও ইউনিয়নের জালালপুর গ্রামের মৃত মাষ্টার উস্তার আলীর বাড়িতে এ ডাকাতির ঘটনা ঘটে। স্থানীয় সূত্রে জানাগেছে জালালপুর গ্রামের মৃত উস্তার আলীর যুক্তরাজ্য প্রবাসী ২ ছেলে মাসুক আহমদ ও কালা মিয়া এক সপ্তাহ আগে দেশে এসেছেন। এ সংবাদে যুক্তরাজ্য প্রবাসীদের বাড়িতে রাতে ২০-২৫ জনের সংঘবদ্ধ সশস্ত্র ডাকাত দল হানা দেয়। ডাকাতরা দ্বিতল বাড়ির গ্রিলের গেটের তালা ও ঘরের দরজা ভেঙ্গে প্রবেশ করে অস্ত্রের মুখে বাড়ির পাহারাদার ও পরিবারের লোকজনকে হাত-পা বেঁধে বেধড়ক মারপিট সহ লুটতরাজ চালিয়েছে।
ডাকাতি চলাকালে ঘরের একটি ছোট ছেলে মোবাইল নিয়ে খাটের নিচে লুকিয়ে পড়ে। এবং খাটের নিচ থেকে মোবাইল ফোনে অন্যবাড়ির তার এক দাদাকে ডাকাতির ঘটনা জানায়। পরে গ্রামের মসজিদের মাইক থেকে ডাকাত-ডাকাত বলে উচ্চস্বরে ঘোষণা দেয়া হলে এলাকার লোকজন সূর-চিৎকার করে লাঠিসোটা নিয়ে বেরিয়ে আসে। অবস্থার বেগতিক দেখে ডাকাতরা আতংক সৃষ্টি করতে কয়েক রাউন্ড গুলি বর্ষণ করে। এক পর্যায়ে মালামাল নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় গৃহকর্তা সহ এলাকার লোকজন ডাকাতদের ধাওয়া করে একটি পাইপগান সহ ডাকাত জগন্নাথপুর উপজেলার আশারকান্দি ইউনিয়নের চকতিলক গ্রামের মখলিছ মিযার ছেলে লাল মিয়া ওরফে জুয়েল (২৯), একই ইউনিয়নের জামালপুর গ্রামের মৃত শহিদ উল্লাহ ওরফে সাইদুল্লার ছেলে সাইফুল (২৩), ওসমানীনগর উপজেলার গোয়ালাবাজার ইউনিয়নের কলাপাড়া- দত্তগ্রামের মৃত সফর উল্লাহর ছেলে আনফর আলী ওরফে আনহার (২৪) এবং একই উপজেলার তাজপুর ইউনিয়নের রবিদাস-পালপাড়া গ্রামের আলিম উল্লাহর ছেলে সাইফুল ইসলাম ওরফে শফিক (২৩)কে আটক করতে সক্ষম হন।
সকালে খবর পেয়ে ছাতক থানা পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে ডাকাতদের আটক করে থানায় নিয়ে আসে। এসময় ডাকাতদের ব্যবহৃত একটি পাইপগান,কয়েকটি গুলির খোসা উদ্ধার করে পুলিশ। জনতার গণধোলাইয়ে আহত ডাকাতদের ছাতক হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হয়। এদিকে ডাকাতদের হামলায় আহত গৃহকর্তা যুক্তরাজ্য প্রবাসী সামছুল ইসলাম, ডালিম আহমদ, আজাদ মিয়া,শাহীন মিয়াসহ অন্তত ৭ জনকে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে জানা গেছে। যুক্তরাজ্য প্রবাসী মাসুক আহমদ জানান, ডাকাতরা ক”টি মোবাইল ফোন ফেলে গেছে। ক্ষয় ক্ষতির পরিমাণ তিনি সঠিক করে বলতে পারেন নি। তিনি বলেন তারা সকল ভাইদের রুম থেকে স্বর্ণ, টাকা, পাউন্ড নিয়েছে ডাকাতরা। এতে নগদ টাকা সহ অনুমান ২০ লক্ষাধিক টাকার মালামাল লুঠ করে নিয়েছে ডাকাত দল।
এর আগেও ছাতক উপজেলার নোয়ারাই ইউনিয়নের কটালপুর (মোরারগাঁও) গ্রামে ও কালারুকা ইউনিয়নের রায়সন্তোসপুর গ্রামে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। ছাতকে সম্প্রতি ব্যাপক হারে চুরি ডাকাতি বৃদ্ধি পেয়েছে। ঘন-ঘন চুরি ডাকাতির ঘটনায় এখানে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি নিয়ে আতংকিত হয়ে পড়েছেন উপজেলাবাসী। ছাতক থানার অফিসার ইনচার্জ মাহবুবুর রহমান ডাকাতির ঘটনার বিষয় স্বীকার করে জানান,ঘটনাস্থল থেকে একটি পাইপগান ও ৩টি গুলির খোসা উদ্ধার করা হয়েছে।