শুক্রবার, ০৮ নভেম্বর ২০২৪, ০২:৪৩ পূর্বাহ্ন

কুষ্টিয়ার হরিপুরে পাগলিকে ধর্ষণ, টাকার বিনিময়ে ধামাচাপা

উত্তর বাংলা
  • আপডেটের সময় : বুধবার, ৩০ আগস্ট, ২০২৩
  • ৫১ Time View

চাঁদ আলী, কুষ্টিয়া

কুষ্টিয়ার হাটস হরিপুর ইউনিয়নে প্রভাবশালীর চাপের মুখে মাত্র ১ লক্ষ টাকার বিনিময়ে ধর্ষণের মত  অপরাধ ধামা চাপা দিতে বাধ্য হয়েছে ধর্ষিতার পরিবার। ঘটনাটি ঘটেছে ইউনিয়নের দক্ষিণ বোয়ালদাহ এলাকার সিরাতুন্নেসা স্কুলের পাশে। ধর্ষক লম্পট তোফাজ্জল সিরাতুন্নেসা স্কুলের পাশে শামীম দোকানদারের পিতা। এলাকা সূত্রে জানা যায় ধর্ষীতা একজন মানসিক প্রতিবন্ধী। গত ২২ তারিখ সকাল সাতটার দিকে ধর্ষিতা পাশের বাড়ি যায়, তখন ঔ বাড়ির লম্পট তোফাজ্জল ওরফে তফে ধর্ষিতাকে একা পেয়ে তার নিজ বাড়ির ফাকা একটি ঘরে নিয়ে যায় এবং ধর্ষণ করে। বিষয়টা তোফাজ্জলের ভাইয়ের মেয়ে সুমি খাতুন দেখতে পাই। তৎক্ষণাৎ সুমি খাতুন কাউকে না বললেও পরে বিষয়টি তার বাড়ির লোকজনকে জানাই। একসময় বিষয়টা পুরো এলাকাতে জানাজানি হয়ে যায়। বিষয়টা জানা জানি হওয়ার পরে ধর্ষিতার স্বামী মন্টু মিয়া এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিদের জানাই। তখন আইজুদ্দিন হাজী নামের একজন ব্যক্তি বিষয়টা কাউকে না জানানোর জন্য মন্টু মিয়াকে চাপ দেয়। হাজী আইজুদ্দিন এলাকার প্রভাবশালী হওয়ায় মন্টুমিয়া পুলিশ প্রশাসনের সাহায্য নিতে ভয় পায়। এ বিষয়ে এলাকায় চাপা ক্ষোভ  বিরাজ করলেও এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তিদের ভয়ে কেউ তেমন মুখ খুলতে চায় না। পরবর্তীতে গত ২৬ তারিখে আইজুদ্দিন হাজির নেতৃত্বে ১ লক্ষ টাকার বিনিময়ে ধর্ষিতার পরিবার বিষয়টা মীমাংসা করতে বাধ্য হয়।
বিষয়টা বিভিন্ন পত্রিকার সাংবাদিকদের নজরে আসলে, সাংবাদিকরা তদন্তের জন্য বোয়ালদাহ দক্ষিণপাড়ায় তোফাজ্জলের ছেলে শামীম দোকানদারের সঙ্গে কথা বলতে গেলে নাজমুল নামের এক ব্যক্তি এসে সাংবাদিকদের জানাই, “এই বিষয়টা আমরা মীমাংসা করে নিয়েছি, এটা নিয়ে বেশি বাড়াবাড়ি করলে আপনাদের সমস্যা হবে। ”
এলাকার চেয়ারম্যান মেম্বার কিংবা প্রশাসন বাদে কিভাবে একটি ধর্ষণের মতো অভিযোগ মীমাংসা করলেন
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে নাজমুল বলেন, “এই এলাকাতে আমরাই সব, আমাদের কোন পুলিশ প্রশাসন প্রয়োজন হয় না। আমরা যেটা করবো সেটাই হবে। ”

এলাকার মেম্বারের সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, “মীমাংসার বিচারে তিনি ছিলেন না, তিনি পরে জানতে পারলেন বিষয়টা মীমাংসা হয়ে গেছে। ”

বিচারের প্রধান আইজুদ্দিন হাজীর সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান “, অভিযুক্ত এবং অভিযোগকারী দুজনেই আমার আত্মীয়, তাই বিষয়টা আমরা সমাধান করে দিয়েছি। এখানে থানা পুলিশের কোন কাজ নাই। ”
কিন্তু ধর্ষণের অভিযোগ কিভাবে এলাকার মাতব্বররা সমাধান করতে পারে, এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ সকল মিথ্যা অভিযোগের কোন ভিত্তি নাই, তাছাড়া কোন প্রমাণও ছিল না, তাই আমরা সমাধান করে দিয়েছি।
এদিকে বিভিন্ন ভিডিও ফুটেজে দেখা যায় ধর্ষিতার এলাকার মানুষ সকলেই বলছে তোফাজ্জেল মন্টুর বউকে ধর্ষণ করছে।।
এই ঘটনা ঘটার পর থেকেই মোফাজ্জল এলাকা থেকে পলাতক।
এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বলেন “, বিচারে মন্টুকে ১ লক্ষ টাকা দেয়া হয়েছে, যেন বিষয়টা নিয়ে বাড়াবাড়ি না করে। আর বাড়াবাড়ি করলে এলাকা থেকে তাড়িয়ে দেয়া হবে।
এ বিষয়ে মন্টুর সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে তার ব্যবহৃত মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
এলাকার সচেতন মহলের মনে এখন একটাই প্রশ্ন টাকা থাকলে কি সব অপরাধ ধামাচাপা দেয়া যায়?

শেয়ার

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও
© All rights reserved © 2022 Uttorbangla24 live
Design & Develop BY Coder Boss
themesba-lates1749691102