ক্রাইম প্রতিবেদক: সিলেট জেলার ওসমানীনগরে একটি কথিত সংগঠনকে চাদাঁ দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় যুবককে অপহরণ চেষ্টা ও যুবকের বসতবাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে ওই কথিত সংগঠনের চাদাঁবাজ চক্রের সদস্যরা। এ ঘটনায় ওসমানীনগর উপজেলা জুড়ে তুলকালাম সৃষ্টি হলেও অজ্ঞাতকারণে মামলা নেয় নি স্থানীয় থানা পুলিশ।
জানা গেছে- ওসমানীনগর থানার আওতাধীন সম্মানপুর এলাকায় গত শনিবার (০১ এপ্রিল) তারিখে চাদাঁ দিতে অপারগতা প্রকাশ করায় “মোকামপাড়া যুবসংঘ” নামীয় কথিত সংগঠনের চাদাঁবাজ চক্রের সদস্যরা এ ঘটনা ঘটায়।
এদিকে এ ঘটনায় পর দিন অথাৎ রবিবার (০১ এপ্রিল) ভুক্তভোগী যুবক ওসমানীনগর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে পরদিন থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে তদন্ত করলে ঘটনার সত্যতা পায়। তবে ঘটনার ১০ দিন অতিক্রম হলেও অজ্ঞাত কারণে মামলাটি রেকর্ড না করে ভুক্তভোগী যুবকের সঙ্গে তালবাহানা করেছে থানা পুলিশ বলে অভিযোগ প্রকাশ।
এক পর্য়ায়ে নিরুপায় হয়ে গত মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) সিলেট আমলগ্রহনকারী ১নং আদালতে ১৩ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেন সম্মানপুর এলাকার মৃত সমিজ উদ্দিনের পুত্র গৌছ উদ্দিন জালালী (৫০)। যাহার ওসমানীনগর সি.আর মামলা নং- ১৩৫/২৩ ইং।
মামলা সুত্রে আসামীরা হচ্ছে ওসমানীনগর থানাধীন সুন্দিখলা এলাকার- মৃত মনোফর আলীর পুত্র আং শহিদ, রেখাত উল্লার পুত্র দিলদার, ছালাত উল্লার পুত্র শাহিন, মৃত মনোফর আলীর পুত্র আব্দুল তাহিদ, আব্দুল কাদিরের পুত্র কামরান, মৃত মনোফর আলীর পুত্র আব্দুল কাদির ও একই থানাধীন সম্মানপুর এলাকার- নোয়াব উল্লার পুত্র মান উল্লা, মৃত মহরম আলীর পুত্র সাকির আলী, মৃত সানু মিয়ার পুত্র বেলাই, আজেফর আলীর পুত্র আমির, মৃত খুর্শেদ উল্লার দুই পুত্র খালিক উদ্দিন ও ছুলেমান সহ ছোট ফিরোজপুর এলাকার মৃত ছায়াদ মিয়ার পুত্র শাহজাহান আহমদ।
মামলা সুত্রে জানা গেছে- আসামীগণ এলাকার চাদাঁবাজ প্রকৃতির লোক। তারা ধীর্ঘদিন যাবৎ “মোকামপাড়া যুবসংঘ” নামীয় কথিত সংগঠনের নামে এলাকার বিভিন্ন প্রবাসীদের কাছ থেকে রকমফের অনুষ্ঠানের নামে প্রচুর টাকা সংগ্রহ ও আত্মসাৎ করে আসছে। কেউ চাদাঁ দিতে অপরাগতা প্রকাশ করলে ঐ ব্যাক্তিকে বিভিন্ন ধরণের নির্যাতন করে তারা। এমনকি তার চলাচলের রাস্তাও এই চাদাঁবাজরা বন্ধ করে দেয়।
ঘটনার আগের দিন আসামী শাহজাহান, আমির, দিলদার বাদীর নিকট চাদাঁ হিসাবে ৫ হাজার টাকা দাবী করলে তিনি অপারগতা প্রকাশ করিলে আসামীগণ তাকে শিক্ষা দিবে মর্মে হুমকি দেয়। ঘটনার তারিখ ও সময়ে বাদী সম্মানপুর মসজিদ হইতে নামাজ পড়িয়া ঘরে ফিরার পথে বুরহানের দোকানের সম্মুখে আসা মাত্র আসামীগণ দেশীয় অস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত অবস্থায় বাদীকে আক্রমণ করিয়া প্রাণে হত্যার উদ্দেশ্যে জোর পূর্বক ধরে নিয়ে যাইতে থাকিলে বাদী প্রাণ রক্ষার্থে চিৎকার করিলে মামলায় বর্ণিত সাক্ষীগণ আসিয়া আসামীদের কবল হইতে প্রাণে রক্ষা করেন। নতুবা আসামীগণ বাদীকে অজ্ঞাতস্থানে নিয়া খুন করে লাশ ঘুম করিয়া ফেলতো।
সিলেট আমলগ্রহনকারী ১নং আদালতে মামলা দায়েরের সত্যতা নিশ্চিত করে বাদী পক্ষের আইনজীবী এডভোকেট মঈনুল হক ফারুক জানান- আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে তদন্ত পূর্বক আসামীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ওসমানীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) আদেশ প্রদান করেন।
এ প্রসঙ্গে ওসমানীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম মাঈন উদ্দিনের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি জানান- প্রতিদিন অনেক সি/আর মামলা আসে এটা আসছে কি না দেখে জানাবো আপনি বাদীর নাম ঠিকানা দিন।
সর্বশেষ আসামীগণের বিরুদ্ধে আইন অনুসারে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছেন মামলার বাদী।