বৃহস্পতিবার, ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৪০ অপরাহ্ন

অন্তবর্তীকালিন সরকার, সেনাবাহিনী, বিপ্লবীরা যেন সীমা লঙ্ঘন না করেন।

উত্তর বাংলা
  • আপডেটের সময় : শনিবার, ১০ আগস্ট, ২০২৪
  • ৪৬ Time View

 

মোঃ নিজাম উদ্দিনঃ

দীর্ঘ ১৬বছর বাংলাদেশকে স্বৈরাচার মুক্ত করতে বিএনপি সহ অন্যান্য রাজনৈতিক দল সুশীল সমাজের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিগন বিরামহীন ভাবে লড়াই করেছেন। এই দীর্ঘ ১৬বছরে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা বিএনপি জামাতের অনেক সাহসী দেশপ্রেমিক নেতাদের ফাঁসি দিয়েছে,গুম খুন হত্যা করেছে। বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে গলাটিপে হত্যা করে সরকার বিরোধী লক্ষ লক্ষ নেতাকর্মীদের পৈশাচিক নিপীড়ন করেছে। দুঃসাহসিক আন্দোলনে সর্বশেষ যুক্ত হয়েছিল কোটা বিরোধী ছাত্র আন্দোলন। অনেক দমন নিপীড়নে রক্ত জরিয়ে চরম নির্যাতন সয়ে গিয়ে রাজপথে অনেক অনেক রক্ত তাজাপ্রাণ বিলিয়ে দিয়ে একটা সফল গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে স্বৈরাচার মুক্ত বাংলাদেশ আমরা ফিরে পেয়েছি। ৫ই আগস্ট অবিস্মরণীয় এক বিজয়ের ইতিহাস বাংলাদেশে রচিত হয়েছে। এই আন্দোলন সফলতার দিকে নিয়ে যেতে ছাত্র/জনতা সহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষের অবিস্মরণীয় ঐক্য, দৃঢ়তা, আত্মত্যাগ ৫ই আগস্ট ২০২৪ইং স্বৈরাচার মুক্ত বাংলাদেশে ১৮কোটি মানুষ আনন্দে ভাসে, এ যেন ঈদের আনন্দ। এমন গণদাবীর নাগরিক আন্দোলন বিপ্লব গণঅভ্যুত্থান বাংলাদেশের ইতিহাসে শুধু নয় বিশ্ব ইতিহাসে বিরল দৃষ্টান্ত। হাজার বছরের ইতিহাসে এমন বাঁধ ভাঙা আনন্দে একটা পুরো জাতি কখনও এতোটা প্রাণখোলে উচ্ছ্বাসে রাস্তায় বিজয় উৎসব করেনি। ১৯৭১সালের মুক্তি যুদ্ধের যে চেতনা নিয়ে যুদ্ধ সংগঠিত হয়েছিল, এবারের ২য় মুক্তি যুদ্ধের চেতনা ছিল তার চাইতেও অনেক মহৎ নিখাঁদ। নিরস্ত্র ছাত্র জনতা অবিশ্বাস্য এক গণ-অভ্যুত্থান সফল করছে।
এই বিজয় স্বৈরাচার বিরোধী ১৮কোটি মানুষের বিজয়। এই বিজয়ের চুড়ান্ত নেতৃত্বে বৈষম্য বিরোধী কোটা আন্দোলনের ছাত্র নেতারা থাকলেও পিছনে থেকে বিএনপি জামাত সহ অন্যান দল মতের রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা এবং পুরো দেশবাসী দেশ বিদেশে এই বিজয় অর্জনে এক ঐতিহাসিক অতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। এই আন্দোলনে যারা শহীদ হয়েছেন শহীদ আবু সাঈদ, শহীদ মুগ্ধ, শহীদ আদনান, শহীদ রাফি সহ, সকল শহীদরা নিশ্চয়ই যুগে যুগে বীরত্বের ইতিহাস নতুন বাংলাদেশের ইতিহাসে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন। তেমনি স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার রক্তচক্ষু উপেক্ষা করে স্বৈরাচার মুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তুলতে যারা বিগত দিনে ফাঁসির মঞ্চে হাসি মুখে শহীদ হয়েছেন শহীদ সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরী, শহীদ মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, শহীদ মাওলানা আলী আহসান মোজাহিদ সহ অনেককে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে হত্যা করা হয়েছে, মাওলানা দেলোয়ার হোসেন সাঈদকে সুকৌশলে হত্যা করা হয়েছে। ইলিয়াস আলী, সালাহউদ্দিন আহমেদ সহ অনেক সাহসী দেশপ্রেমিক নেতাদের গুম করা হয়েছে। ১৬ বছরে বিভিন্ন সভা সমাবেশে অংশগ্রহণ করে যার শাহাদাৎ বরণ করেছেন, তাদের আত্মত্যাগকে যেন অবজ্ঞা করা না হয়।

দেশবাসী নিশ্চয়ই কৃতজ্ঞ চিত্তে স্বীকার করবে এবং শ্রদ্ধা সম্মান স্নেহ ভালোবাসায় স্মরণ রাখবে স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার পতন আন্দোলনের সাহসী বীর ছাত্রনেতা সহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার শ্রদ্ধেয়জনদের। এই গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে দেশবাসীর বিস্ময়কর এক তারুণ্য খোঁজে পেয়েছে, জাতি খোঁজে পেয়েছে বিশ্ব বরৈণ্য অধ্যাপক ডঃ মোহাম্মদ ইউনুস মতো সাহসী প্রসংশিত নেতৃত্ব। সজাগ থাকুন, টুনকু ভুল আর আত্ম অহমিকায় আমাদের মহিমান্বিত এমন গৌরবের নতুন বিজয় যেন প্রশ্নবিদ্ধ কিংবা কলঙ্কিত না হয়।
প্রায় নীভে যাওয়া গণতন্ত্র হাজার হাজার প্রাণের বিনিময়ে আপন গৌরবে আবার ফিরে এসেছে। স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের গণতন্ত্র, প্রশাসন এবং অর্থনীতিকে ধ্বংসস্তুপে পরিনত করে চরম লজ্জাজনক পতনে দেশ ছেড়ে পালিয়েছে।
নতুন অন্তভর্ত্তী সরকার নানা মুখি কঠিন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হবে। দেশীবিদেশী অনেক গভীর ষড়যন্ত্র থাকবে তাদের সামনে। দেশবাসীর প্রত্যাশাও মাথায় রাখতে হবে।
সত্যি পরিতাপের বিষয় ২য় মুক্তি যুদ্ধে বিপ্লবী ছাত্র নেতারা ইতিমধ্যে কিছুটা অতিরিক্ত ভাবে তাদেরকে উপস্থাপন করে চলেছেন।
আচ্ছা, সমস্ত অর্জন কি শুধু তাদের?
স্বৈরাচার শেখ হাসিনা মুক্ত বাংলাদেশ ছিল ১৮কোটি মানুষের প্রত্যাশা। তাদের ত্যাগ আবেদন লড়াই সংগ্রামে সহযোগিতা সেটাও গভীর ভাবে উপলব্ধি করে স্বীকার করতে হবে। বিএনপির অনেক নেতাকর্মী নির্বাসিত জীবনে স্বৈরাচার হঠাও আন্দোলনে তাদের অবদানও কম নয়। আমি নিজেও দেশে ফিরে যাওয়ার প্রাণপণ চেষ্টা করছি,জানিনা কতদিন সময় লাগবে পরিস্থিতি সহনীয় হতে।
বড় বড় রাজনৈতিক দল এবং পরম শ্রদ্ধেয় নেতা বিশিষ্টজনদের যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করতে হবে।
অন্তভর্ত্তী সরকারের প্রথম দিনেই সরকারের সড়ক ব্যবস্থাপনা নিয়ে শ্রদ্ধেয় গোলাম মওলা রনি আজকে চরম হতাশা ব্যক্ত করে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এমনটা নিশ্চয়ই কাম্য নয়।
এই গণঅভ্যুত্থানের বিপ্লবী ছাত্রনেতা কিংবা বিপ্লবী সরকারে তাদের প্রতিনিধি যদি বলতে শুরু করেন বা আচরণে প্রকাশ করেন এই দেশটা এখন শুধু তাদের। শুধু তাদের চিন্তা আচরণই দেশবাসীর কিংবা অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতাদের মেনে নিতে হবে, তাহলে এই স্বাধীনতা এই বিজয় নিশ্চয়ই দেশবাসী চায়নি, তা হবে প্রশ্নবিদ্ধ।
পরিশেষে শুধু এটুকুই বলবো একজন বিশ্ববরেণ্য মানুষকে আমরা বাংলাদেশ মেরামতের দায়িত্ব দিয়েছি। অনেক অনেক প্রত্যাশা তাঁর কাছে, তিনি যেন বিশ্ব পরিমন্ডলে নিন্দিত হতে না হয়।
শহীদ আবু সাঈদরা হাজার বছর প্রেরণার উৎস হয়ে জাতিকে আলো দিয়ে গৌরবান্বিত করুক। গভীর শ্রদ্ধায় হাজার বছর শহীদ আবু সাঈদরা হউক স্মরণীয়।
বাংলাদেশ জিন্দাবাদ, ডক্টর মোহাম্মদ ইউনুস জিন্দাবাদ,জিন্দাবাদ।

মোঃ নিজাম উদ্দিন, সাবেক চেয়ারম্যান
উত্তর খুরমা ইউনিয়ন পরিষদ, ছাতক সুনামগঞ্জ।
যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপি।

শেয়ার

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও
© All rights reserved © 2022 Uttorbangla24 live
Design & Develop BY Coder Boss
themesba-lates1749691102