ইসমাইলুল করিম লামা প্রতিনিধি:
অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’র গতি বাড়ছে। (১৩ মে'২৩) শনিবার সন্ধ্যা থেকে পার্বত্য জেলার বান্দরবান পাশ্ববর্তী জেলা কক্সবাজার ও তৎসংলগ্ন উপকূলীয় এলাকায় অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় ‘মোখা’র অগ্রভাগের প্রভাবে দমকা হাওয়াসহ ঝড়-বৃষ্টি শুরু হতে পারে। আগামীকাল (১৪মে) রবিবার সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টার মধ্যে এটি আরও উত্তর-উত্তরপূর্ব দিকে অগ্রসর ও ঘনীভূত হয়ে কক্সবাজার-উত্তর মিয়ানমার উপকূল অতিক্রম করতে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর এক বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, ঘূর্ণিঝড় কেন্দ্রের ৭৪ কিলোমিটারের মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১৫০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝোড়ো হাওয়ার আকারে ১৭০ কিলোমিটার পর্যন্ত বাড়ছে। এ জন্য কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দরকে আট নম্বর মহাবিপদ সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। পায়রা ও মোংলা সমুদ্রবন্দরসমূহকে ৪ চার নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে।
উপকূলীয় জেলা কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, ফেনী, নোয়াখালী, লক্ষ্মীপুর, চাঁদপুর, ভোলা এবং তাদের কাছের দ্বীপ ও চর আট নম্বর মহাবিপদ সংকেতের আওতায় থাকবে। ঘূর্ণিঝড়টির অগ্রবর্তী অংশ ও বায়ুচাপ পার্থক্যের আধিক্যের প্রভাবে উপকূলীয় জেলা কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম এবং তাদের কাছের দ্বীপ ও চরের নিম্নাঞ্চল স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৮ থেকে ১২ ফুট অধিক উচ্চতার বায়ুতাড়িত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হতে পারে।
ঘূর্ণিঝড়টি আজ শনিবার ভোররাতে চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৮৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৭৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্রবন্দর থেকে ৮৩০ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৭৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করে।
এই পরিস্থিতিতে (১৩ মে'২৩ইং) শনিবার বিকালবেলা এই পরিস্থিতিতে 'অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড়' মোখা মোকাবেলায় লামায় ফাইতং ইউনিয়ন বিভিন্ন স্থানে পার্বত্য মন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপির নির্দেশে ও ফাইতং ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ ওমর ফারুক, ইউপি সদস্য, কৃষকলীগ সভাপতি মুহাম্মদ জুবাইরুল ইসলাম (জুবাইর) লামা যুব রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি অন্যতম ছাত্রনেতা মোঃ শামিম উসমান ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসাইন জয়য়ের অনুরোধক্রমে: মানবিক ছাত্রনেতা ছাত্রলীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক, রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি সদস্য, ইসমাইলুল করিম ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড ছাত্রলীগ ও রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি সদস্য ৫নং ওয়ার্ড দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটি সদস্যদের নিয়ে প্রতিটি ঘরে ঘরে ঘূর্ণিঝড় 'মোখা' বার্তা ও স্কুল আশ্রয় স্থানে চলে আসার অনুরোধ জানান।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী ইসমাইলুল করিম বলেন, বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘুর্ণিঝড় “মোখা” প্রবল গতিতে আজ ১৩/১৪ মে শনিবার রবিবার তারিখে বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় আঘাত হানতে পারে ও প্রচুর ক্ষয় ক্ষতি হবার সম্ভবনা রয়েছে। এছাড়াও অতিবৃষ্টির কারণে ভূমিধ্বসের সম্ভাবনা আছে। তাই আপনারা নিকটস্থ নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্রতে অবস্থান করুন।
আপনাদের পালিত গবাদিপশু গরু,ছাগল, নিরাপদ স্থান নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা নিয়ে যান। এবং ঘুর্ণিঝড় 'মোখা' মহাবিপদ সংকেত ঘোষণা। ঘূর্ণিঝড় আঘাতের পূর্বমুহুর্তে করবেন।
একটি ঘূর্ণিঝড় আঘাত করতে যাচ্ছে- প্রস্তুতি নিন। ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য সুরক্ষা সামগ্রী, যেমন- মাস্ক, হাত ধোয়ার সাবান, খাবার স্যলাইন, পানি বিশুদ্ধকরন ট্যাবলেট, ডিগনিটি কিট ও প্রাথমিক চিকিৎসা সামগ্রী সংগ্রহে রাখুন।
ব্যাটারিচালিত রেডিও, টর্চলাইট ও মোবাইল ফোন প্রস্তুত রাখুন।
চার্জ দেওয়া যায় এমন সব জিনিসগুলোতে পর্যাপ্ত চার্জ দিয়ে রাখুন। ঘর-বাড়ির পাশে যে সব গাছপালা বাতাসের ধাক্কায় ঘরের উপর পড়তে পারে, সে সব গাছের বিপজ্জনক ডালপালা কেটে দিন। খাবার পানি, শুকনো খাবার ও প্রয়োজনীয় ওষুধ মজুদ রাখুন। নিজের ও পরিবারের সদস্যদের জাতীয় পরিচয়পত্র, দলিল, ভিজিডি/ভিজিএফ কার্ড, শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ পলিথিনে বেঁধে নিজেদের সাথে রাখুন।
আপনার বাড়ির বা এলাকার কোন টিউবওয়েলে লবনাক্ত পানি ঢুকে যাওয়ার আশংকা থাকলে টিউবওয়েলের মাথা খুলে পাইপের মুখ পলিথিন দিয়ে শক্ত করে বেঁধে দিন, যাতে পরে সেটি থেকে নিরাপদ পানি পাওয়া যায়। পরিবারে যদি গর্ভবতী নারী , শিশু, বয়স্ক, প্রতিবন্ধী এবং অসুস্থ ব্যাক্তি থাকে তবে জরুরী পরিস্থিতিতে তাদেরকে সরিয়ে নেয়ার প্রস্তুতি নিন। নারী ও কিশোরীদের প্রতি সকল হয়রানি, সহিংসতা, নির্যাতন ও পাচার প্রতিরোধে সচেতন থাকুন। নির্দেশনা মোতাবেক যথাসময়ে ঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্রে আশ্রয় গ্রহণ করুন।