বৃহস্পতিবার, ০৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:০৪ অপরাহ্ন

তামাকের পরিবর্তে সরিষা চাষে ঝুকছেন কৃষক।

উত্তর বাংলা
  • আপডেটের সময় : মঙ্গলবার, ৩ জানুয়ারী, ২০২৩
  • ১৯৭ Time View

 

মিনহাজুল হক বাপ্পী, লালমনিরহাট জেলা প্রতিনিধিঃ
লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলায় কৃষকরা তামাকের পরিবর্তে সরিষা চাষে ঝুঁকছেন। বাজার দর ভালো হওয়ায় ক্ষতিকর তামাকের পরিবর্তে সরিষা চাষে ঝুঁকছেন আদিতমারী উপজেলার কৃষকরা। ফলে চলতি বছরে উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে বাণিজ্যিকভাবে পুষ্টিকর সরিষা তৈলবীজের আবাদ কয়েকগুণ বেড়েছে।

আদিতমারীতে এক শতাব্দী ধরে বিভিন্ন তামাক কোম্পানির নির্দেশে ক্ষতিকর তামাক চাষ চলছে। কোম্পানিগুলোর প্রতারণা বুঝতে পেরে কৃষকরা তামাক চাষের বিকল্প হিসেবে মৌসুমী রবি আলু ভুট্টা ও সরিষা চাষাবাদ বেছে নিচ্ছেন। ফলে ধীরে ধীরে পাল্টে যেতে শুরু করেছে উপজেলার গ্রামাঞ্চলের ফসলি মাঠের চিত্র। উৎপাদিত পণ্য বিক্রির নিশ্চয়তা পাওয়ায় কৃষকরা বাণিজ্যিকভাবে সরিষা চাষ করছেন।

উপজেলার ভেলাবাড়ী এলাকার এক কৃষক বলেন, আমি তামাক চাষ করতাম। এটা লাভজনক হবে। তবে বিভিন্ন শারীরিক সমস্যায় আক্রান্ত হয়েছি। ক্ষতিগ্রস্ত হয় পরিবারের সদস্যরাও। তামাক চাষ ভালোর চেয়ে বেশি ক্ষতি করে। তাই এখন সরিষা চাষ করছি। ফলন ও দাম দুটোই ভালো। দাম এভাবে থাকলে ফলনে আমাদের কোনো সমস্যা হবে না।

দুর্গাপুর ভেলাবাড়ী কমলাবাড়ী সারপুকুর সাপ্টিবাড়ী ভাদাই পলাশী মহিষখোচা ইউনিয়নের কৃষকরা জানান, সরিষার চেয়ে তামাকের ফলন বেশি। দামের দিক থেকে শস্যের দাম বেশি হলে সরিষা চাষে আমাদের কোনো সমস্যা নেই, আমরা ক্ষতিকর তামাক চাষ পরিহার করব।

কৃষি কর্মকর্তারাও উর্বরতা ও কৃষিজমির ক্ষতি রোধে তামাক চাষকে নিরুৎসাহিত করছেন।
আদিতমারী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ওমর ফারুক জানান, কৃষকদের তামাক ছেড়ে সরিষা চাষে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। কৃষকরা এখন তামাকের ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে অনেক সচেতন। অনুকূল আবহাওয়া ও ভালো মানের বীজ সরবরাহের কারণে জমিতে সরিষা চাষ বেড়েছে। বারি সরিষা ১৪ ও ১৫ নামে দুটি সরিষার জাত কৃষি গবেষণা কেন্দ্র থেকে মাঠে পাঠানো হয়েছে। এই সরিষার মান ও ফলন খুবই ভালো। পাঁচ কেজি সরিষার তেল চার কোয়ার্টার কেজি। একই পরিমাণ স্থানীয় সরিষার তেল সর্বোচ্চ ৩ কেজি।

লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোঃ হামিদুর রহমান জানান, গত বছর উপজেলায় ৬৯০ হেক্টর জমিতে তামাক চাষ হয়েছিল, এ বছর তা কমে দাঁড়িয়েছে ৬২০ হেক্টর। কৃষকদের তামাক চাষ থেকে শস্য চাষে যেতে উৎসাহিত করা। আমরা কৃষি প্রণোদনাও দিচ্ছি। আশা করি ধীরে ধীরে তামাক চাষ কমবে। তামাক ছাড়া অন্য ফসলের আবাদ বাড়বে। কারণ সরিষায় সেচ, রোপণ, মাড়াই ও বীজের খরচ অন্যান্য ফসলের তুলনায় খুবই কম। রোগের আক্রমণ নেই। সরিষা মাটিতে প্রয়োগ করা TSP সারের 75% গ্রহণ করে। বাকিটা জমিতেই থেকে । ফলে সরিষা চাষের পর জমির উর্বরতা বেশি থাকে, ফলে পরবর্তী ফসল চাষে চাষ ও সার খরচ অনেক কম হয়।

আদিতমারী উপজেলা কৃষি অফিসের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে প্রায় ৫৩৫ হেক্টর জমিতে তামাকের পরিবর্তে সরিষার আবাদ হয়েছে। সরিষার ফলন হেক্টর প্রতি ১.২৫ মেট্রিক টন পর্যন্ত হতে পারে যার আনুমানিক ফলন ৮০০ মেট্রিক টন।

শেয়ার

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই বিভাগের আরও
© All rights reserved © 2022 Uttorbangla24 live
Design & Develop BY Coder Boss
themesba-lates1749691102