ওসমানীনগর প্রতিনিধি::
সিলেটের ওসমানীনগরে জাল দলিলের মাধ্যমে নামজারী করে দখল হচ্ছে সরকারী খাস জমি। এসব বিষয়ে দেখেও না দেখার ভান করছেন উপজেলা ভূমি অফিসের সংশ্লিষ্টরা। অভিযোগ উঠেছে, উপজেলা ভূমি অফিসে বিপুল পরিমান অর্থের বিনিময়ে জাল দলিলের মাধ্যমে সরকারি খাস জমির দখল দেয়া হচ্ছে প্রভাবশালী ব্যাক্তিদের। সিলেট-ঢাকা মহাসড়কের ৬লেন প্রকল্পের জমি অধিগ্রহন প্রক্রিয়া ও আশ্রয়ন প্রকল্প শুরুর পর থেকে উপজেলা সাব-রেজিস্ট্র অফিসের ক্ষমতাধর দলিল লেখক এবং ইউনিয়ন ভূমি অফিসের তসিলদারদের যোগসাজে সরকারী খাস জমির ভূয়া দলীল তৈরীর সিন্ডিকেট গড়ে উঠেছে। আর সেই সব ভূয়া দলিল দিয়ে উপজেলা ভূমি অফিসে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে নামজারি হচ্ছে সরকারী খাস জমি।
জানা গেছে, ২২৪.৫৪ বর্গ কিলোমিটার আয়াতনে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে রয়েছে সরকারী খাস জমি। সরকারি অকৃষি খাস জমির পরিমান ৩২০৩.৭৭ একর, সরকারি কৃষি খাস জমির পরিমান ১৪০.৩৮ একর। উপজেলা ভূমি অফিসের রক্ষনা বেক্ষনের অভাবে এসব সরকারি খাস জমি যাচ্ছে প্রভাবশালী দখলদারদের পেটে। ভিবিন্ন মাধ্যমে জাল দলিল তৈরী করে নামজারির করে এসব জমি দখলে নিচ্ছেন তারা। আশ্রয়ন প্রকল্প শুরুর পর থেকে উপজেলা সাব-রেজিস্ট্র অফিসের ক্ষমতাধর দলিল লেখকদের মাধ্যমে সরকারী খাস জমির ভূয়া দলীল তৈরীর সিন্ডিকেট গড়ে উঠে এর সাথে যুত্ত রয়েছেন কয়েকজন ইউনিয়ন ভূমি অফিসের কয়েকজন তসিলদারও। সিন্ডিকেটের মাধ্যমে প্রকাশ্যে অর্থ-বানিজ্য হলেও এসব বিষয়ে উপজেলা ভূমি অফিস নিরব ভূমিকা পালন করছে। ওসমানীনগরে সরকারি খাস জমি দখলের অভিযোগে জেলা প্রশাসক ও দূর্নীতি দমন কমিশনে অভিযোগ প্রেরন করা হয়েছে। চলতি বছরের ২২ ফেব্রুয়ারী জাল দলিলের মাধ্যমে নামজারীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের অনুরোধ জানিয়ে উপজেলার উসমানপুর ইউনিয়নের ব্রাম্মণশাসন গ্রামের মনোহর আলীর পুত্র আব্দুল করিম জেলা প্রশাসক ও দূর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যানসহ প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ প্রদান করেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, সরকারী অর্পিত সম্পত্তির ১/১ নং খতিয়ানের যে সমস্ত জমি কাগজের জটিলতার নামজারি হচ্ছে না এসব জমি উপজেলা ভূমি অফিসের কতিপয় কর্মকর্তা কর্মচারীর মাধ্যমে নামজারী করে দেয়ার আশ্বাস প্রদান করে রফা দফা চালিয়ে যাচ্ছেন কিছু অসাধু দলিল লেখকদের সম্বন্বয়ে গঠিত একটি সংঘবদ্ধ প্রভাবশালী সিন্ডিকেট। জেলা প্রশাসকের অনুমতি ছাড়া ১৯৭১ সালের পরবর্তী সময়ে হিন্দুদের কোন জমি বিক্রি করা যেতো না। কিন্তু ১৯৭১ সালের আগের তারিখ দিয়ে প্রতারণা মূলক জাল দলিল সৃজন করে নামজারি করে দেয়ার বিষয়ে চলছে রফাদফা। ইতিমধ্যে বর্তমান ওসমানীনগর উপজেলার এস এ খতিয়ান নং ১১৮, জেল নং ১০৮,বিএস১০৫, দাগ নং ১৩৯ এর ০.২২ একর জায়গা জালিয়াতির মাধ্যমে সৃজনকৃত নামজারী মামলা নং৩৬০৩ মূলে সৃষ্ট খতিয়ান নং ২৫৬ নামজারি হয়েছে বলে অভিযোগে উল্যেখ করা হয়। এ নামজারী বাতিলসহ জড়িত সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য লিখিত অভিযোগ প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে প্রদান করেছেন সংশ্লিষ্টরা। অভিযোগের অনুলিপি সচিব,ভূমি মন্ত্রণালয়, জেলা প্রশাসন, ওসমানীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহসহকারী কমিশনার ভূমির কার্যালয়ে প্রেরণ করা হলেও অভিযোগ দায়েরে ১৫ দিনেও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ গ্রহন করা হচ্ছে না।
এই বিষয়ে ওসমানীনগর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রাজিব দাশ পুরকায়স্থ বলেন,সরকারী জায়গা নামজারী করে নেয়া কোনো অবস্থায়ই সম্বভ নয়। যে অভিযোগটি এসেছে এটা আমি এউপজেলায় যোগদানের পূর্বে নামজারী মামলটি নিস্পত্তি হয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখছি অভিযোগের সত্যতা পওয়া গেলে আইননুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।