রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর প্রথমবারের মতো রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ ও মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের মধ্যে সাক্ষাৎ হলো। ভারতের দিল্লিতে অনুষ্ঠিত জি-২০ সম্মেলনের এক সাইডলাইন বৈঠকে তাদের মধ্যে এই সাক্ষাৎ হয়। খবর সিএনএনের।
সম্প্রতি রাশিয়া পারমাণবিক অস্ত্রবিষয়ক একটি চুক্তিতে থেকে সরে দাঁড়িয়েছে। এরপর দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনার পারদ তুঙ্গে ওঠে।প্রতিবেদনে বলা হয়, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্থনি ব্লিঙ্কেন ও রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ভি লাভরভের মধ্যে বৈঠকটি অপ্রত্যাশিত ছিল। রাশিয়ার যুদ্ধ এখন দ্বিতীয় বছরে, অনেক দেশ এর অর্থনৈতিক প্রভাব, বিশেষ করে খাদ্য ও জ্বালানির দাম নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে উঠছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, যিনি রুশ হামলার সরাসরি সমালোচনা এড়িয়ে গেছেন, তিনি জি-টোয়েন্টি বৈঠকে একটি ভিডিও বার্তায় জানিয়েছেন, তিনি বুঝতে পেরেছেন যে বর্তমান 'ভূ-রাজনৈতিক উত্তেজনা' আলোচনার বিষয় হবে। কূটনীতিকরা বিষয়টির দিকে নজর দেবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।স্টেট ডিপার্টমেন্টের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ব্লিঙ্কেন লাভরভকে তিনটি পয়েন্ট দিয়েছেন। সেগুলো হলো- যুক্তরাষ্ট্র রাশিয়ার বিরুদ্ধে তার প্রতিরক্ষায় ইউক্রেনকে যতদিন সময় লাগবে সমর্থন করতে থাকবে, রাশিয়ার 'নিউ স্টার্ট' পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ চুক্তিতে পুনরায় যোগদান করা উচিত যা দেশটি সম্প্রতি প্রত্যাহার করেছে এবং রাশিয়ার উচিত বন্দী মার্কিন নাগরিক পল হুইলানকে মুক্তি দেওয়া।রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ব্লিঙ্কেন নিজেই লাভরভের সঙ্গে বৈঠকের জন্য অনুরোধ করেছিলেন। এটি পরামর্শ দেয়, বাইডেন প্রশাসন ইউক্রেনের যুদ্ধে বিরোধী পক্ষ থাকা সত্ত্বেও রাশিয়ার সঙ্গে যোগাযোগের লাইন উন্মুক্ত রাখতে চায়।
এর আগে বৃহস্পতিবার ব্লিঙ্কেন জি-টোয়েন্টি বৈঠকে কিয়েভের জন্য বৃহত্তর সমর্থন জোগাড় করতে চেয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, 'দুর্ভাগ্যবশত, ইউক্রেনের বিরুদ্ধে রাশিয়ার উস্কানিহীন ও অন্যায় যুদ্ধের কারণে এই বৈঠকটি আবারও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।'লাভরভ জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার শেষ হওয়া জি-টোয়েন্টি বৈঠকে যুদ্ধ নিয়ে মতবিরোধের কারণে যৌথ বিবৃতি দেওয়া হবে না। তিনি পশ্চিমাদের বিরুদ্ধে সংঘাত উস্কে দেওয়ার এবং ইউক্রেনকে অস্ত্র দিয়ে তাতে ইন্ধন যোগানোর অভিযোগ করেছেন।মার্কিন কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে আল-জাজিরার এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্লিঙ্কেন ও লাভরভ আনুমানিক ১০ মিনিট কথা বলেছেন। বৈঠকে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সামনে তিনটি বিষয় তুলে ধরেন ব্লিঙ্কেন। সেগুলো হলো- যুদ্ধ শেষ হতে যত দিন লাগুক, সে পর্যন্ত ইউক্রেনকে সহায়তা করে যাবে যুক্তরাষ্ট্র; রাশিয়ার উচিত পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ চুক্তি ‘নিউ স্টার্ট’ স্থগিতের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করা এবং রাশিয়ার হাতে বন্দী যুক্তরাষ্ট্রের পল হেলানকে মুক্তি দেওয়া।