সাখাওয়াত হোসেন,পাঁচবিবি (জয়পুরহাট) প্রতিনিধিঃ
গতানুগতিক পদ্ধতির পরিবর্তে পলি মালচিং পদ্ধতিতে মরিচ চাষ করে স্বাবলম্বি হয়েছেন এরফান নামের এক যুবক। সে জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার উচিতপুর গ্রামের আফজাল হোসেনের পুত্র । ২০১০সালে দিনাজপুরের বিজুল কামিল মাদ্রাসা থেকে কামিল পাশ করা উচ্চ শিক্ষিত যুবক হয়েও চাকুরীর পিছনে না ছুটে কৃষি কাজে জড়িয়ে পড়েন তিনি । বন্ধুর কাছে পলি মালচিং পদ্ধতিতে মরিচ চাষের সাফল্যের কথা শুনে আগ্রহী হয়ে ওঠেন । পরে উপজেলা কৃষি অফিসে যোগাযোগ করে সেখানে প্রয়োজনীয় পরামর্শ ও প্রশিক্ষণ গ্রহণ করে চলতি বছরের ৮ ফেব্রয়ারী নিজের ১৫ শতক জমিতে পলি মালচিং পদ্ধতিতে মরিচ চাষ শুরু করেন। স্থানীয় একটি নার্সারী থেকেস্তৃ হাজার টাকায়স্ত হাজার বিজল্ী প্লাস চারা সংগ্রহ করে রোপন করেন। এতে জমি প্রস্তুত বীজ, পলি ও অন্যান্য আনুষাঙ্গিক বাবদ ৩৫-৪০ হাজার টাকা খরচ হয় তার । লাগানোর ৫ মাস পর ঐ মরিচ ক্ষেত থেকে লক্ষাধিক টাকার মরিচ বিক্রি করেছেন তিনি। আরো ৩ লক্ষাধিক টাকার বেশি মরিচ বিক্রির লক্ষ্য মাত্রা থাকলেও সম্প্রতি অতি বৃষ্টির কারণে মরিচ ক্ষেতে কিছুটা ফলন বিপর্যয় হয়েছে। এরপরও আরো লক্ষাধিক টাকার মরিচ বিক্রি হবে বলে তিনি আশা করছেন। এরফান বলেন, বন্ধুর পরামর্শ পেয়ে আমি প্রথমে এ পদ্ধতিতে মরিচ চাষ করতে উদ্বুদ্ধ হই । এ পদ্ধেিত চাষ করতে প্রথমে প্রয়োজনীয় সার খইল প্রয়োগ করে জমি চাষ করে, কাত করে তার জমিটি পলিথিন দিয়ে ঢেঁকে দিতে হয়। পরে চারা লাগানোর স্থান গুলোতে ফুটা করে চারা লাগাতে হয়। এ পদ্ধতিতে চাষ করলে কখনো জমিতে আগাছা হয়না। এতে করে কৃষককের জমি ভেদে হাজার হাজার টাকা বেঁচে যায় ।
আধুনিক পলি মালচিং পদ্ধতিতে মরিচ চাষ করে এরফানের এমন অভানীয় সাফল্য পাওয়া অনেকেই তার মরিচ ক্ষেত দেখতে আসছেন। স্বল্প খরচ ও অধিক লাভ হওয়ার কারণে এলাকার অনেকেই পলি মালচিং পদ্ধতিতে মরিচ চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।
একই গ্রামের কায়েম উদ্দিন মন্ডল সহ একাধিক কৃষক বলেন, আমাদের বাপ দাদাদের গতানুগতিক মরিচ চাষের পদ্ধতির পরিবর্তে , পলি মালচিং পদ্ধতিতে মরিচ চাষ করায় গাছ ও ফলন দুটোই ভাল হয়েছে। এ কারণে তার থেকে বীজ নিয়েছি। আগামীতে এ পদ্ধতিতে মরিচ চাষ করবেন বলে জানান।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ লুৎফর রহমান বলেন, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সাম্প্রতিক সময়ে কৃষকদের বিভিন্ন কৃষি প্রযুক্তিগত পরামর্শ দিয়ে আসছে। বর্তমান সময়ে পলি মালচিং একটি লাভজনক পদ্ধতি যা কৃষকরা সাদরে গ্রহণ করেছেন । তিনি বলেন, মরিচ ছাড়াও পলি মালচিং পদ্ধতিতে শাক সবজি, টমেটো ও বেগুন চাষে কৃষি বিভাগ থেকে বিভিন্ন প্রকল্পের আওতায় প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। যাতে করে তাদের কৃষি পণ্যের উৎপাদন বৃদ্ধি পায় ।