স্টাফ রিপোর্টার:
রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আড়ানী ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ড উত্তর সোনাদহ জামে মসজিদে আযান দেওয়াকে কেন্দ্র করে অতর্কিত হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় মসজিদ পরিচালনা কমিটির দুইজন সদস্য গুরুত্বর আহত হয়েছে। রবিবার (৭ জুলাই) দুপুরে যোহর নামাজের আযান দেওয়াকে কেন্দ্র করে এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, উত্তর সোনদহ জামে মসজিদের আওতায় ১০৪ ঘর মানুষের একটি সমাজ রয়েছে। এর মধ্যে উশৃংখল আচরণ ও সমাজিক নানা কর্মকান্ডে বাঁধা দেওয়ায় ৫ ঘর মানুষকে সমাজচ্যুত করা হয়। এরপর থেকেই মসজিদ, মাদ্রাসা ও মসজিদে আযান দেওয়া এবং কোরআন তেলাওয়াত কে তারা সাংঘর্ষিক মনে করে। কেউ মৃত্যু বরণ করলে মসজিদের মাইকে এলাউন্স করলে তারা ক্ষিপ্ত হয়। সমাজচ্যুতদের মধ্যে রয়েছেন, মসলেম উদ্দিন, ফজলুল হক উভয় পিতা মৃত জাহাঙ্গীর @জংলী, জসিম উদ্দীন মোল্লার ছেলে আব্দুর রশিদ, মৃত আজিত মোল্লার ছেলে তুজাম এবং মজনু।
স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, নিয়মিত নামাজি না হলেও রবিবার দুপুরে নির্ধারিত সময়ের আগেই মসজিদে আজান দিতে যান ফজলুল হকের ছেলে জিনারুল। মাইকের যান্ত্রিক ত্রুটি থাকায় মসজিদের ইমাম শামসুল ইসলাম মাদ্রাসার এক ছাত্রকে বক্সে আজান দিতে বলেন। এ সময় জিনারুল রাগান্বিত হয়ে তার পরিবারের লোকজন কে ডেকে নিয়ে গেলে তারা ইমাম শামসুল ইসলাম ও তার ছাত্র কে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ সহ মারতে উদ্ধৃত হয়। বিষয়টি জানতে পেরে ঘটনা স্থলে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সদস্য মানিক ও সেন্টু হাজির হয়। এ সময় সমাজচ্যুতদের আক্রমণে গুরুত্বর আহত হয় মানিক ও সেন্টু আলী। স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে প্রথমে চারঘাট উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে তাদের অবস্থা আশংকা জনক হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক রামেক হাসপাতালে প্রেরন করেন। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনা স্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
এ বিষয়ে উত্তর সোনাদহ নূরানী হাফেজিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক ও মসজিদের ইমাম শামসুল ইসলাম বলেন, আমি মাদ্রাসা ও মসজিদের দায়িত্ব পালন করি। মাদ্রাসার বেতন না দেওয়া ও সমাজের লোকের সাথে সুসম্পর্ক না থাকার কারনে তাদের সমাজ থেকে আলাদা করা হয়। পরবর্তীতে তারা জোর করে মসজিদে এসে ফেসবুক চালায়, ছবি দেখে, বলতে গেলেই যতো দন্দ হয়। আজকে জোরপূর্বক আজান দিতে আসে ফজলুল হকের ছেলে জিনারুল কিন্তুু মাইকের যান্ত্রিক ত্রুটি থাকায় আমি আমার এক ছাত্রকে বক্সে আজান দিতে বলি। এর পর আমি এবং আমার ছাত্রদের মারার জন্য জিনারুল ও তার গোত্রের লোক জন ধারালো হাসুয়া, সাবল ও লঠি-সোটা নিয়ে মসজিদের সামনে দাঁড়িয়ে থাকে। তখন আমি ভয়ে আমার ছাত্রদের নিয়ে দরজা বন্ধ করে কমিটির লোকজন কে মোবাইলে জানাই। এ সময় কমিটির সদস্য মানিক ও সেন্টু আসলে তাদের উপর অতর্কিত হামলা করা হয়।
আড়ানী ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ড সদস্য কুদরত আলী বলেন, আমি এই সমাজেরই মানুষ এই মসজিদেই নামাজ পড়ি। আমার জানা মতে জিনারুল নিয়মিত নামাজ পড়েনা অথচ ঘটনার দুই তিনদিন আগে থেকেই নির্ধারিত সময়ের আগেই সে আজান দিচ্ছে। হয়তো তার ভেতরে কোন পরিকল্পনা থাকতে পারে। আজকের এ ঘটনায় হামলার শিকার দুই জন কমিটির সদস্য তারা আশঙ্কা জনক অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আছেন। তবে এ ঘটনা কে অত্যন্ত জঘন্য ও নিকৃষ্টতম বলে আক্ষায়ীত করেছেন এই জনপ্রতিনিধি।
ঘটনার পর থেকে মসলেম উদ্দিন,ফজলুল হক, আব্দুর রশিদ, তুজাম এবং মজনু বাড়িতে না থাকায় তাদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
বাঘা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আমিনুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ ফোর্স পাঠিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত কেউ কোন অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।